
সুরজিত দাস , নদীয়া : ফের উত্তপ্ত কাশ্মীর। পর্যটকদের উপর বর্বর জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত ভূস্বর্গ। একাধিক জায়গায় চালানো হয়েছে ধারাবাহিক গুলি ও গ্রেনেড হামলা। প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬-৩০ জন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক বাঙালিও। আতঙ্কের সেই রাতের সাক্ষী হয়ে উঠলেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা নবদম্পতি সুদীপ্ত দাস ও দেবশ্রুতি দাস। হানিমুনে গিয়ে মৃত্যুকে একপ্রকার ছুঁয়ে ফিরে এসেছেন তাঁরা।
পেহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার মুখে পড়ে তড়িঘড়ি আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন এই দম্পতি। সুদীপ্ত দাস জানান, “হঠাৎ করেই গুলির শব্দে চমকে উঠি। চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শুরু হয় গোলাগুলি। প্রাণ হাতে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে ছুটি।” দেবশ্রুতি জানিয়েছেন, “চোখের সামনে মানুষ মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন। আজও বিশ্বাস হচ্ছে না, সত্যিই বেঁচে আছি আমরা।”
সোমবার রাতে যখন হামলা শুরু হয়, তখন তাঁরা ছিলেন পেহেলগাঁওয়ের একটি জনপ্রিয় পর্যটকস্থলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় কোনওক্রমে একটি আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছন তাঁরা। বর্তমানে শ্রীনগরের সেই বাড়িতেই রয়েছেন সুদীপ্ত ও দেবশ্রুতি। ভিডিও কলে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে আশ্বস্ত করেছেন— তাঁরা এখন নিরাপদে।
কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্রীক এই বিস্ফোরণ ও হামলার ঘটনার পর দ্রুত তৎপর হয়েছে সেনাবাহিনী। চলছে তল্লাশি অভিযান, সংঘর্ষ এখনও জারি। কেন্দ্রীয় সরকারও পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রেখেছে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে কৃষ্ণনগরে, দাস পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন। সুদীপ্তর মা বলেন, “ছেলেকে আর বউমাকে ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত শান্তি নেই। ওদের ফেরার অপেক্ষায় আছি।” সূত্রের খবর, আগামী এক-দুদিনের মধ্যেই দম্পতি ফিরবেন নদিয়ায়।
প্রাণে বেঁচে ফেরা এই অভিজ্ঞতা তাঁদের জীবনের এক অমোচনীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে বলেই জানিয়েছেন নবদম্পতি। আনন্দে শুরু হওয়া সফর যে এমন বিভীষিকায় রূপ নেবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি তাঁরা।