
ওঙ্কার ডেস্ক : ছেলে-বউমার বৈবাহিক টানাপোড়েনে গৃহহীন হয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। পুত্রবধূর হাতে নানাভাবে অপদস্থ হয়ে, নিজের বাড়িতেই বসবাসের অধিকার হারিয়েছিলেন তিনি। শেষমেশ আইনের শরণাপন্ন হয়ে, কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আর সেখানেই মিলল স্বস্তি—আদালতের নির্দেশে নিজের ঘরে ফিরলেন বৃদ্ধা।
ঘটনার সূত্রপাত, ওই বৃদ্ধার ছেলে ও পুত্রবধূর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলাকালীন। এই সুযোগে বৃদ্ধার পুত্রবধূ স্থানীয় দুষ্কৃতীদের সাহায্যে বাড়ির দখল নেন বলে অভিযোগ। বাড়ির দরজা, রান্নাঘর, বাথরুম, এমনকি ফ্রিজ ও আলমারিও তালাবদ্ধ করে দেন তিনি। শুধু তাই নয়, শাশুড়িকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে ঘরে লাগিয়ে দেন বিকট শব্দের সাইরেন।
অসহায় বৃদ্ধা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে শুনানি হয়। বৃদ্ধার আইনজীবী আদালতকে জানান, পুত্রবধূর এমন আচরণে তাঁর মক্কেল নিঃস্ব ও গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে, অভিযুক্ত পুত্রবধূ সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর আইনজীবীর বক্তব্য, পুত্রসহ তিনি শ্বশুরবাড়িতেই থাকতে চান এবং তাঁরও সেই অধিকার রয়েছে।
তবে বিচারপতি অমৃতা সিনহার পর্যবেক্ষণ ছিল অত্যন্ত মানবিক। তিনি বলেন, “আপনারা শিশুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। সন্তান যা দেখছে, ভবিষ্যতে আপনাদের সঙ্গেও তাই করতে পারে। ভাল শিক্ষা দিন, ভাল ব্যবহার করুন।”
এরপরই আদালত স্পষ্ট নির্দেশ দেয়—বৃদ্ধাকে অবিলম্বে বাড়ির চাবি ফেরাতে হবে এবং তিনি সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে বাড়িতে থাকতে পারবেন। রান্নাঘর, বাথরুমসহ সমস্ত সুযোগসুবিধা ব্যবহার করার অধিকার থাকবে তাঁর। বিচারপতি জানান, ভবিষ্যতে আদালতের নির্দেশ অমান্য করলে পুত্রবধূকেই বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২০ মে।