
ওঙ্কার বাংলা অনলাইন ডেস্কঃ রাজ্য নির্বাচন কমিশন নিজেদের দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাই আগামী ১০ দিন রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে সেন্ট্রাল ফোর্স কোঅর্ডিনেটরের উপরই দায়িত্ব দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। শুভেন্দু অধিকারী ও অধীর চৌধুরীর আদালত অবমাননা মামলায় এদিন এই নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।
বুধবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলায় বিএসএফ-এর আই.জির রিপোর্ট জমা দেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী। হাই কোর্টে জমা দেওয়া ৮৩ পাতার রিপোর্টে বিএসএফ-এর আই.জি জানান তাঁদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন কোন সহযোগিতা করেনি। একাধিকবার মেল করা হয়েছিল। কোথায় কোথায় বুথ এবং স্পর্শ কাতর এলাকা জানতে চেয়ে কিন্তু কমিশনের তরফে কোন সদুত্তর পাওয়া যায় নি। কোন তথ্য দেয়নি কমিশন। রাজ্যের আইনজীবী এজি জানান রাজ্য সরকারের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলা ঠিক নয়।
এরপরই ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের মন্তব্য হাই কোর্ট নিরাপত্তার জন্য আপনাদের একটি ছাতা দিয়েছিল, সেটা আপনারা ব্যবহার করতে পারলেন না। এরপরই তীব্র তিরস্কার করে প্রধান বিচারপতি বলেন আইন শৃঙ্খলা সামলাতে সম্পূর্ন ব্যর্থ রাজ্য সরকার। অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কথা মুখে বললেও কাজে শূন্য পেয়েছে কমিশন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী থাকা সত্বেও রাজ্য পুলিশ তাদের সঠিক ভাবে ব্যবহার করেনি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পক্ষে রাস্তা চেনা সম্ভব না। তাঁদের কি রাস্তা চিনিয়ে দেওয়া উচিত ছিল না ? রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় বোমা, গুলি চালানোর ঘটনায় মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কমিশন, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল ? মানুষ ভোট দিতে গিয়ে কতটা অসহায় বোধ করেছিল, আপনারা কেন কোন পদক্ষেপ করলেন না ? শুরু থেকেই কমিশন এবং রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করে নি। প্রিসাইডিং অফিসার আক্রান্ত, পুলিশ আক্রান্ত, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নেই। এরপরই কলকাতা হাই কোর্টের প্রধানবিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ বিভিন্ন রাজ্য থেকে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে অবিলম্বে তাদের অশান্ত এলাকায় ব্যবহার করতে হবে। আগামী ১০ দিন রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে সেন্ট্রাল ফোর্স কোঅর্ডিনেটরের উপরই দায়িত্ব দেয় আদালত।
উল্লেখ্য এদিন কমিশনের আইনজীবীও অশান্তি, রক্তপাত খুনোখুনির ঘটনার জন্য রাজ্য সরকারের দিকেই আঙ্গুল তোলেন ।
এদিন প্রধান বিচারপতির ডেভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট নির্দেশে জানায় প্রতিটি জেলায় পুলিশ সুপার এবং স্থানীয় থানায় অফিসার ইনচার্জ কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে এলাকায় টহল দেবেন। আগামী ১০ দিন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। জয়েন্ট পেট্রালিং এবং রুট মার্চ করে মানুষের মধ্যে ভয় ভীতি কাটাতে হবে। জেলা প্রশাসনকে সব রকম সহযোগিতা করতে হবে বাহিনীকে। নিয়মিত রিপোর্ট দিতে হবে কমিশন এবং বিএসএফ-এর আইজিকে। ক্ষতিগ্রস্থদের কি ভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় সেই বিষয়ে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। আগামী ২৬ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি।