
বিপ্লব দাশ : মোদীর পর অমিত, চারদিনের মধ্যে বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা তাঁদের বঙ্গ সফরে স্পষ্ট করে গেলেন তৃণমূলের লক্ষ্মীভাণ্ডারের জবাব এবার সিঁদুরে দেওয়া হবে। অর্থাৎ ২৬শের নির্বাচনে ‘সিঁদুর’ যে বিজেপির প্রত্যাঘাত হচ্ছে এটা নিশ্চিত। আর সে কারণেই তৃণমূল প্রথম থেকেই বলতে শুরু করেছে, সিঁদুর নিয়ে রাজনীতি নয়। আলিপুরদুয়ারের প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সেন্টিমেন্টকে তুলে ধরেছিলেন, তা যে মুখ ফসকে বেরিয়ে যাওয়া কথা নয় তা নিয়ে বোধ হয় আর সন্দেহের অবকাশ নেই। মমতা পরে তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেও, তাঁর মতো একজন বিচক্ষণ এবং দুঁদে রাজনীতিক যে আলটপকা কথা বলবেন না এটা নিশ্চয়ই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মানবেন।
তাই লক্ষ্মী বনাম সিঁদুরে যে আগামীদিনে বঙ্গ রাজনীতিতে পুজিত হতে চলেছে এটা অমিত শাহ্-র নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে একরম পরিষ্কার। এবং এটাও পরিষ্কার যে বঙ্গ রাজনীতি এবার মহিলা ভোটারের এক্তিয়ারে। কিন্তু কথা হল- বাংলার ভোট কী কখনো আবেগকে প্রশ্রয় দেয় ! কার্গিল কিংবা পুলওয়ামা নিয়ে বিজেপি যে জাতিয়তাবাদী কার্ড খেলতে পেরেছিল, এবার সিঁদুর দিয়ে তা কি সম্ভব ? অন্তত বাংলায় ! এমনিতেই সংঘর্ষ বিরোতির পর ভারতের প্রত্যাঘাত নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠছে। সেনা প্রধানের স্বাক্ষাৎকার ঘিরে ভারতের হুংকারে যে শীতলা হাওয়া বইতে শুরু করেছে, বিরোধীপক্ষ থেকে যে ভাবে “অপারেশন সিঁদুর” সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর আওয়াজ উঠছে, তাতে মোদী, অমিত শাহ্ কতদিন তার উত্তাপ ধরে রাখতে পারবেন তাও একটা বড় প্রশ্ন। ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পর যে প্রবল সহানুভুতির হাওয়া সারা দেশে বয়েছিল, তখনও কিন্তু এ রাজ্যে কংগ্রেস আদৌ দাঁত ফোটাতে পারেনি। রাজীব গান্ধীর পরও না। বাবরি মসজিদ ইস্যুতেও নয়। তাই বাংলার রাজনৈতিক চরিত্রটা কি অবশেষে সিঁদুরে বদলাবে ? নাকি তার অসাম্প্রদায়িক, উন্নয়নশীল মানসিকতায় অটুট থাকবে তার জন্য অবশ্যই অপেক্ষা করতে হবে ২৬শের ভোট অবদি।