
সংবাদদাতাঃ জানেন কি আপনার দৈনন্দিন ব্যবহারের সানস্ক্রীন লোশনও উত্ত পরিবেশের বড়ো-সড় ক্ষতি করতে পারে ? কী? অবাক হচ্ছেন? আজ্ঞে হ্যাঁ! এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এলো প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র গবেষকের সাম্প্রতিক জার্নালে।
সানস্ক্রিন লোশনের অন্যতম উপাদান জিঙ্ক অক্সাইড সামুদ্রিক প্রাণীদের চরম শত্রু। এ হল সেই রাসায়নিক, যা আমি আপনি প্রতিদিন সানস্ক্রিনের সাথে গায়ে-মুখে মাখি , যা ক্রিকেটার রা ঠোঁটে বা নাকে মেখে মাঠে নামেন। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে হয়তো তাঁদের ত্বককে রক্ষা করে সেটি, তবে পাশাপাশি বড়সড় ক্ষতি করে দেয় পরিবেশের।
কলেজ স্ট্রিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ সায়েন্স বিভাগের মেরিন ইকোলজি ল্যাবরেটরিতে একটি অভিনব গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা। সামুদ্রিক প্রাণীর উপর রাসায়নিকের প্রভাব জানতে খুব গুরুত্বপূর্ন হলো কাঁকড়া। তাই সুন্দরবনের মোহনা থেকে বেশ কিছু কাঁকড়া সংগ্রহ করে এনে সেগুলিকে শুকনো মাছের কণা খাইয়ে রাখা হয়েছিল। সাধারণ অবস্থায় সেগুলির ওজন করা হয়। সেগুলির অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহের ছবিও তোলা হয় এক্স-রে করে। তারপর কাঁকড়াগুলিকে আনা হয় জিঙ্ক অক্সাইডের ন্যানো পার্টিকলের সংস্পর্শে। সেজন্য জিঙ্ক নাইট্রেট হাইড্রক্সাইড, সাইট্রিক অ্যাসিড, অ্যামোনিয়ার দ্রবণ ল্যাবরেটরিতে ব্যবহার করা হয়েছিল। কিছু কাঁকড়াকে বেশি, একাংশকে কম পরিমাণে জিঙ্ক অক্সাইডের ন্যানো পার্টিকলে রাখা হয়। কয়েকটি কাঁকড়ার ক্ষেত্রে বাড়ানো হয় তাপমাত্রাও। গবেষণার পরে বেশ আশঙ্কার তথ্যই সামনে আসে। দেখা গিয়েছে, বেশি বা কম, যে পরিমাণই হোক, ওই রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা কাঁকড়াগুলির বৃদ্ধি থমকে গিয়েছে। সেগুলির ক্ষেত্রে বাহ্যিক স্ট্রেসের লক্ষণ দেখা যায়। তাই, কমে গেছে ওজন।
প্রেসিডেন্সির গবেষক রা জানাচ্ছেন, জিংক অক্সাইডের ক্রমাগত ব্যবহার পরিবেশের জীববৈচিত্রের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, পরের বার সানস্ক্রীন মেখে সি বিচে স্নান করতে যাওয়ার আগে বিষয়টা একবার ভেবে দেখবেন নাকি?