
বিপ্লব দাশ : কাশ্মীর যখন ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে বলে মনে হচ্ছিল, ঠিক তখনই ফের তাণ্ডব দেখালো পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। বুঝিয়ে দিল কাশ্মীর কাশ্মীরেই আছে। সেই আতঙ্ক, উপত্যকার গায়ে দগদগে রক্ত, হাহাকার……। তবে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলা নিয়ে এল সন্ত্রাসের দুটি নতুন দিক। এক, এই প্রথম জঙ্গিরা হত্যালীলা চালাল ধর্মের নিরিখে। দুই, এই প্রথম জঙ্গিরা টেনে আনল রাজনীতিকে। অর্থাৎ, নিছক নাশকতা নয়, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা মাফিক এই ষড়যন্ত্র। এর আগে বিশ্বের যখনই যেখানে জঙ্গি নাশকতা হয়েছে- তাতে উঠে এসেছে কোনো না কোনো ভাবে জেহাদি উচ্চারণ। প্রকাশ পেয়েছে কোনো না কোনো জঙ্গি গোষ্টির চাহিদা অথবা প্রতিহিংসা। কিন্তু এভাবে ধর্মীয় বিভাজনের জঙ্গিপনা দেখা যায়নি কখনো। মোদীর কথায়, ঠিক এখানেই ভারতের আত্মায় আঘাত পড়েছে। আঘাত লেগেছে রাজনীতিতেও। ৩৭০ ধারা বিলোপের পর কাশ্মীরের অশান্তি গেছে, এমন একটা বার্তা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু তা যে ঠিক নয়, সেটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল পহেলগাঁও। দেখিয়ে দিল, উপত্যকা জুড়ে নিরাপত্তার গলদ একই জায়গায়। নাহলে আট ঘন্টা ট্রেকিং করে জঙ্গিরা এলো সীমান্ত পেরিয়ে, অথচ তার টের পেল না নিরাপত্তা রক্ষীরা এটা ভাবতেই অবাগ লাগে।
তাই ‘কি ছিল, কি ছিল না’ থেকে বেরিয়ে এসে এখন দুটি আলের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে দিল্লির অবস্থান। একদিকে দেশবাসির ভাবাবেগ, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন। এর মধ্যেও রাজনীতির গন্ধ কম নয়। তবে এটা ঠিক, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সময় এখন উপযুক্ত। পাকিস্থানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাংশের ভারতমুখীতা ভারতকে সাহস ও শক্তি জোগাবে। ফলে এই সুযোগ সম্ভবত দিল্লি হাতছাড়া করবে না।