
বিট্টু অধিকারী ওঙ্কার বাংলাঃ ঋতুস্রাব একটি প্রাকৃতিক ঘটনা ও স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া। ঋতুচক্র কোনো রোগ নয় বরং প্রজনন ও জন্মধারা পদ্ধতির একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বিভিন্ন গোপনীয়তা ,সংকোচ, ও লজ্জার কারনে সামাজিক ট্যাবুতে পরিণত হয়েছে। যার ফলে এখনও গ্রামে গঞ্জে থাকা বহু মহিলা নানান রকম কুসংস্কার মেনে চলে । এর ফলে নানা অজ্ঞতা ও অব্যাবস্থাপনার কারনে মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঋতুস্রাব কেন হয়?
ঋতুস্রাবের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে নারীর সারা জীবনের প্রজনন স্বাস্থ্য এবং শারীরিক সুস্থতা। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর মেয়েদের যোনিপথের মাধ্যমে জরায়ুর অভ্যন্তরীন থেকে রক্ত ও মিউকলাস টিস্যুর সংমিশ্রণে নিয়মিতভাবে তরল পদার্থ আকারে নিঃসৃত হয়। যা মাসিক বা ঋতুস্রাব নামে পরিচিত। সাধারনত ১০ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে মেয়েদের প্রথম ঋতুস্রাব শুরু হয়।
ঋতুস্রাব চলাকালীন সমস্যা
শরীরের গঠন ও হরমোনের তারতম্য অনুসারে পিরিয়ড চলাকালীন ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে । সাধারনত পেটে ব্যাথা , শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যাথা,অবসাদ, খিদে কমে যাওয়া বা খেতে ইচ্ছা না করা, বিরক্তিভাব দেখা দিতে পারে। তাই এই সময় ভয় বা অবহেলা না করে বাড়তি কিছু যত্নের প্রয়োজন হয়। তেমনি কিছু বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন। চলুন দেখে নিই কি কি সচেতনতা প্রয়োজন।
ঋতুস্রাব চলাকালীন সমস্যার সমাধান
১) পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি প্রচুর জল খেতে হবে এবং নিয়মিত স্নান করা প্রয়োজন। গ্রামে গঞ্জে এখনও অপরিস্কার কাপড় ব্যাবহার করে অনেকেই । কিন্তু এই সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা অত্যন্ত জরুরী।
২) এই সময় হরমোনের প্রভাবে মানসিক ও শারীরিক কিছু পরিবর্তন হয় , মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞ দের মতানুসারে ডার্ক চকলেট বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে খিটখিটে মেজাজের থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।
৩) একটি কুসংস্কার প্রচলিত আছে যে এই সময় চুলে জল দিতে নেই বা চুল ভেজাতে নেই , এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই , বিশেষজ্ঞ দের মতে এই সময় চুলের গোড়া আলগা হয়ে যায় তাই চুল ধোয়ার পর সাবধানে আঁচড়াতে হয় নাহলে অনেক চুল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৪) এ সময় ভারী কাজ ,ব্যায়াম, সাঁতার, বা সাইকেল চালানো যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
৫) পিরিয়ড চলাকালীন যেহেতু জরায়ু মুখ উন্মুক্ত থাকে, তাই কোনো খোলা জায়গা অর্থাৎ পুকুর, বা নদীতে স্নান করা উচিত নয়। ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে।
৬) অনিয়মিত পিরিয়ড সহ অন্যান্য সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বাজারে প্রচলিত কোনো ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।