
সুমিত চৌধুরীঃ ব্রিগেডে রবিবারের সমাবেশে ডিওআইএফ তথা সিপিআইএম নেতাদের আক্রমণের বর্ষামুখ ছিল প্রধানত তৃণমূলের দিকে। মীনাক্ষী থেকে মহম্মদ সেলিম সকলেই তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন তৃণমূল নেতৃত্বকে। কাঠগড়ায় তুলেছেন বিভিন্ন ইস্যুতে দুর্নীতির দায়ে।
পাশাপাশি বিজেপিকে আক্রমণ একদম ছিল না তা নয়। কিন্তু সুর ছিল অনেকটা নরম। ব্যক্তিগতভাবে শুভেন্দু কে আক্রমণ করেছেন সিপিআইএম নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতিকে আক্রমণ করা হয়েছে ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে।
কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সিপিআইএম তথা বামপন্থীদের যুবনেতৃত্ব একেবারেই নীরব ছিলেন রাম মন্দির ইস্যু তে। এদিন ব্রিগেড সমাবেশে সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করেছেন এবং করিয়েছেন সিপিএমের যুব নেতৃত্ব। যে প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে আমাদের দেশ ধর্মনিরপেক্ষ সমাজতান্ত্রিক দেশ।
অথচ গোটা দুনিয়া জুড়ে ভারতবর্ষের ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা য়। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ যেভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত বাবরি মসজিদের জায়গায় অযোধ্যার রাম মন্দির গড়বার পক্ষে রায় দিয়েছেন তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
আগামী ২২ শে জানুয়ারি আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নগ্নপদে হেঁটে গিয়ে রামলালাকে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন অযোধ্যার রাম মন্দিরে। অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনকে ঘিরে দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি নিয়েছে আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।এটা বোঝার জন্য কোন রাজনৈতিক পন্ডিত হওয়ার দরকার নেই যে মোদি শাহ জুটি রাম মন্দির কে সামনে রেখে মেরুকরণের রাজনীতিতে বাজিমাত করবার জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপাচ্ছেন। আমাদের দেশের সংখ্যালঘু মানুষের কাছে এবং যারা অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন তাঁদের কাছে বাবরি মসজিদ একটা ক্ষত বিশেষ।
এ রাজ্যে অন্য বামপন্থীরা ২২ শে জানুয়ারিকে সামনে রেখে পাল্টা প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। নকশাল পন্থী এবং এসএসসি একযোগে ২২ শে জানুয়ারি নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে প্রায় ১ লক্ষ মানুষের জমায়েত করতে চলেছে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার প্রতিবাদে।
সিপিআইএম নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছেন তারা আমন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে যাবেন না। কিন্তু রবিবারের বিশাল ব্রিগেড সমাবেশে যখন সংবিধান রক্ষার শপথ নেয়া হচ্ছে। তখন রাম মন্দির এবং অযোধ্যায় ইসুতে এই সার্বিক নীরবতা রাজনৈতিক মহলের কাছে বিস্ময়কর লেগেছে।