
সুমিত চৌধুরীঃ অবশেষে গণধর্ষণের মামলা নিলো সন্দেশখালির পুলিশ। গ্রেফতার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শিবু হাজরা। গণধর্ষণ ছাড়াও একাধিক মামলার রুজ হয়েছে শিবু এবং উত্তমের বিরুদ্ধে। যে দুজনের বিরুদ্ধে গনরোষ বারবার আছে পড়ছিল সন্দেশখালিতে। অন্যান্য অভিযোগ ছাড়াও সব থেকে তাৎপর্যপূর্ণ অভিযোগ হচ্ছে গণধর্ষণের মামলা পুলিশের রুজু করা। কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে শুক্রবার বসিরহাট আদালতে সন্দেশখালীর এক মহিলা বিচারপতির কাছে ১৬৪ ধারা মোতাবেক গোপন জবানবন্দী দেয়ার পরই পুলিশ এই মামলা রুজু করেছে।
তারপরই শনিবার গ্রেপ্তার হয়েছে শিবু হাজরা। গণধর্ষণের অভিযোগে প্রশাসনিক শিলমোহর পড়েছে। যে অভিযোগ বারবার অস্বীকার করে আসছিল প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তারা। এমনকি রাজ্যের মহিলা কমিশন থেকে শিশু কমিশন কেউই এই অভিযোগ কে বিন্দুমাত্র স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি। সে ক্ষেত্রে আচমকা প্রশাসনের এই ভোল বদল কেন?
রাজনৈতিক সূত্রের খবর অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় তৃণমূল নেতৃত্ব বিশেষ করে অভিষেকের কাছে এটা স্পষ্ট হয়েছিল যে সন্দেশখালিতে যা যা ঘটেছে এতে দলের গ্রহণযোগ্যতা এলাকায় দ্রুত কমছে। বিশেষ করে শিবু হাজার মত ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে দল ব্যবস্থা না নিলে অবস্থা আরো খারাপ হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যাতেই অভিষেক জরুরী ভিত্তিতে উত্তর ২৪ পরগনার নেতা মন্ত্রী এবং সাংসদ কে নিয়ে একটি জরুরি অনলাইন বৈঠক করেন। সেই অনলাইন বৈঠকে বসিরহাটের সংসদ নুসরাত জাহানও যোগ দেন। জানা গেছে বৈঠকে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সংসদ এবং বিধায়কদের বক্তব্য শুনবার পর অভিষেক এর উদ্যোগে মূলত প্রশাসন সক্রিয় হয় যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে।
ততক্ষণে অবশ্য বসিরহাটে ওই মহিলার গোপন জবানবন্দী বিচারকের কাছে জমা পড়ে গেছে। তারপরে গণধর্ষণের অভিযোগ রুজু করা ছাড়া পুলিশের কাছে আর রাস্তাও ছিল না।
কিন্তু শুধুমাত্র গণধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের মামলার রুজু করা বা শিবুহাজরা কে গ্রেফতার করা নয়, দলগতভাবে তৃণমূল কংগ্রেস এলাকায় মানুষের ক্ষোভ নিরসনে নেমেছে। এমনকি জলকর বানানোর জন্য ছিনিয়ে নেয়ার কৃষকের জমির টাকা যারা পায়নি তাদেরকে সেই টাকা দেয়ার প্রক্রিয়ায় শুরু হয়েছে দলের উদ্যোগে।
এই গোটা প্রক্রিয়াটাকেই অবশ্য লোকজন বলছে ঠেলার নাম বাবাজি। বিগত লোকসভা নির্বাচনে সন্দেশখালি এলাকাতে এমনিতেই নুসরত বিজেপির কাছে ভোটে পিছিয়ে ছিল।
এবারও যদি সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় তাহলে পরিস্থিতি কঠিন হবে। কারণ সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বসাতে ইতিমধ্যে আইএসএফ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করে অভিষেক নিজ সক্রিয় হয়েছেন সর্বোচ্চ স্তর থেকে ড্যামেজ কন্ট্রোলের প্রক্রিয়া শুরু করতে।