
ওঙ্কার ডেস্ক : ভারতীয় ইউটিউবার এবং ভ্রমণ ভ্লগার জ্যোতি মালহোত্রা দেশদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। জেরায় স্বীকার করেছেন, পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন তিনি। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করে দেশের গোপন তথ্য পাচার করেছেন বলেও তদন্তকারীদের জানিয়েছেন জ্যোতি। সূত্রের দাবি, তদন্ত চলাকালীন একাধিক প্রমাণের ভিত্তিতে তিনি তাঁর অপরাধ কবুল করেছেন।
জ্যোতি মালহোত্রা, ওরফে ‘জ্যোতিরানি’, হরিয়ানার হিসারের বাসিন্দা। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের নাম ‘Travel With Jo’। ট্রাভেল ব্লগিং-এর আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে তিনি আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাঁর পাসপোর্ট নম্বর 56098262, যা তিনি নিজেই জানিয়েছেন।
জ্যোতির স্বীকারোক্তি থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালে তিনি ভিসার জন্য দিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনে যান। সেখানেই তাঁর পরিচয় হয় ‘আহসান-উর-রহিম’ ওরফে ‘দানিশ’-এর সঙ্গে, যিনি পাকিস্তান হাইকমিশনের এক নিরাপত্তা অফিসার। এরপর থেকেই দানিশের সঙ্গে তাঁর মোবাইল নম্বর আদানপ্রদান এবং ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ শুরু হয়।
জ্যোতি জানিয়েছেন, এরপর তিনি দুবার পাকিস্তানে গিয়েছেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে আলি হাসান নামে এক ব্যক্তির পরিচয় হয়, যিনি দানিশের ঘনিষ্ঠ। আলির মাধ্যমেই তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানি ও ইতালীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের দেখা হয়, যারা নিজেদের সেনা অফিসার পরিচয় দিয়েছিলেন। শাকির ও রানা শাহবাজ নামে দুই কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়, শাকিরের নম্বর তিনি নিজের ফোনে ‘জাট রাধাওয়ান’ নামে সেভ করে রাখেন যাতে সন্দেহ না হয়।
জ্যোতি দেশে ফেরার পরও পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেন বলে জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তিনি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন তথ্য পাঠাতে শুরু করেন। তদন্তকারীদের দাবি, এই তথ্যগুলির মধ্যে সেনা গতিবিধি, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সম্পর্কিত তথ্য এবং বিদেশ মন্ত্রকের কিছু বিষয়ও ছিল।
জ্যোতির বক্তব্য অনুযায়ী, দিল্লির পাকিস্তান হাইকমিশনে দানিশের সঙ্গে একাধিকবার তাঁর সরাসরি সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানেই অনেকবার তথ্য আদানপ্রদান হয়েছে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।
এক ইউটিউব ভ্লগারের ছদ্মবেশে দেশের গোপন তথ্য পাচারের এই খবরে এখন তুলকালাম গোটা দেশ। কীভাবে একজন সাধারণ ইউটিউবার এমন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হয়ে উঠল, তা নিয়েই তদন্ত চলছে।