
বিপ্লব দাশ : এসএসসি কাণ্ডে আমাদের নজর যেন আটকে আছে চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিকে। তাঁদের আন্দোলন, তাঁদের নিয়ে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক চাপান উতরের উপরই আমাদের মনোনিবেশ আটকে গেছে। বিচার ব্যবস্থা ও চাকরিহারাদের নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজতে গিয়ে সরকারে দৃষ্টি সম্ভবত মার খাচ্ছে চলতি শিক্ষা ব্যবস্থায়। এর মধ্যে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে অচলায়তন দেখা দিচ্ছে, যার ফলে অনিশ্চয়তার মুখে ছাত্রছাত্রীরা তা নিয়ে ভাববার বুঝি অবকাশ নেই কারোরই। এই সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার পর। যে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীরা একাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের ভবিষ্যতের কথা কে ভাববে ?
এরমধ্যেই দেখা গেছে বহু স্কুলে মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের ভর্তি বন্ধ রেখেছে। কারণ, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর অভাব। যুক্তি যে অসঙ্গত তা এক্কেবারেই নয়। পড়ুয়াদের ভর্তি করে নিলেই তো স্কুলগুলির দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। তাদের পড়াবে কে ? আর পড়ানোর শিক্ষক যদি না থাকে তাহলে ওদের ভর্তি করিয়ে কি ভাবে চলবে স্কুলগুলি ? এর উত্তর নেই ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক কিংবা শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছে। স্কুল পরিচালন কমিটিগুলিরও মাথায় হাত। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় রাজনীতি মাথাচাড়া দিচ্ছে। আমাদের সমাজ যে নেগেটিভ রাজনীতির দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, এ যেন তারই আরেক রূপ। এ ওর ঘাড়ে দায়িত্ব আর দোষ চাপাতে গিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ছে আগামী প্রজন্ম। যা সমাজের পক্ষে অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
এমনিতেই জেলার শিক্ষা ব্যবস্থা মূলত সরকার পরিচালিত। ফলে চাইলেই আপদকালীন ব্যবস্থার কোনো সুযোগ নেই। তাই এই বিপুল পরিমান মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ কি, তার উত্তর এখন কারোর কাছে নেই। ফলে, এই দিকটিতে যত দ্রুত না তৎপর হচ্ছে সরকার, এর মীমাংসারও কোনো পথ নেই। কিন্তু বিচার ব্যবস্থার জেরে সরকারেরও হাত পা বাঁধা। এই অবস্থায় স্কুলগুলির পরিচান কমিটিকেই প্রাথমিক দায় নিতে হবে, নাহলে স্কুলগুলির শিক্ষা ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়বে।