
স্পোর্টস ডেস্ক : আগামী বৃহস্পতিবার (ভারতীয় সময়ে শুক্রবার মধ্যরাত ১২.৩০) ও ২৬ মার্চ চলতি বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচ খেলবে ভারত। প্রথমটি অ্যাওয়ে ম্যাচ, যা হবে সৌদি আরবের আভায় ও পরেরটি হোম ম্যাচ, যা হবে গুয়াহাটিতে।
এই দুই ম্যাচে নামার আগে প্রতিপক্ষকে ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী বললেন , “প্রথমবার যখন ওদের বিরুদ্ধে খেলেছিলাম, তার চেয়ে ওরা এখন অনেক উন্নতি করেছে। শুরুর দিকে ওদের বিরুদ্ধে স্বচ্ছন্দেই খেলতাম আমরা। কিন্তু ধীরে ধীরে ওরা অনেক উন্নতি করেছে। আর দুই দেশ যেহেতু একই অঞ্চলে, তাই আমরা এখন একে অপরের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীই হয়ে গিয়েছি। আমাদের মধ্যে এখন উত্তেজনাপূর্ণ লড়াই হয়। কারণ, গত এক দশকে দুই দেশই ফুটবলে উন্নতি করেছে। ওদের খেলোয়াড়রা এখন দেশের বাইরে গিয়ে খেলায় ওরা অনেক উপকৃত হয়েছে”।
ভারত ও আফগানিস্তানের ফুটবল সম্পর্কের শুরু সেই ১৯৯৪৯-এ, কাবুলে নিজেদের মধ্যে এক ফ্রেন্ডলি সিরিজের মাধ্যমে। এর পরেই দিল্লিতে ১৯৫১-র এশিয়ান গেমসে প্রথম সরকারি ম্যাচে মুখোমুখি হয় ভারত ও আফগানিস্তান। সাম্প্রতিককালে দুই দেশের ফুটবল-দ্বৈরথে রোমাঞ্চ ও উত্তেজনার পারদ চরমে উঠেছে বারবার।
২০১১ থেকে ২০১৬, এই ছ’বছরের মধ্যে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি ঘুরেফিরে হয় ভারত, নয় আফগানিস্তানের হাতেই উঠেছে। টানা তিনবার ফাইনালে মুখোমুখি হয় দুই দেশ এবং ২০১১-য় ৪-০-য় জিতে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা খেতাব অর্জন করে ভারত। ২০১৩-য় কাঠমান্ডুতে ভারতকে ২-০-য় হারিয়ে বদলা নেয় আফগানরা। ভারতের বিরুদ্ধে সেটিই তাদের একমাত্র জয়। সেই ম্যাচে সুনীল ৬০ মিনিটের মাথায় পরিবর্ত হিসেবে নেমেও গোল শোধ করতে পারেননি।
দু’বছর পরে বদলার পালা আসে ভারতের এবং ২০১৫-র ফাইনালে ফের তারাই জেতে। সেটিই ছিল ভারতের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর সাফ-জয়। তিরুবনন্তপুরমে ৪০ হাজার দর্শকের সামনে বাড়তি সময়ে গোল করে দলকে ২-১-এ জেতান জেজে লালপেখলুয়া ও সুনীল ছেত্রী। ভারতের জয়সূচক গোলটি আসে ১০১ মিনিটের মাথায়। তারপর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন আরও বেড়ে যায়।
২০২২ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে দু’বারের মুখোমুখিই শেষ হয় ১-১-এ। কিন্তু ২০২২-এ কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যে ভাবে আফগানদের হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন করে সুনীলের ভারত, সেটিই ছিল সেরা।
সুনীল বলেন “কলকাতার ম্যাচটা আমার কাছে বেশি স্মরণীয়। সাহালের গোলটাই পুরো ছবিটা পাল্টে দিয়েছিল। বাড়তি সময়ের ওই দুর্দান্ত জয়সূচক গোলটা ছাড়া আর কারও কিছু মনে থাকার কথাও নয়। উদান্ত কিছুক্ষণ বল পায়ে রেখে আশিককে দেয়। আশিকও বল ধরে রাখার পর সহালকে দেয় ফিনিশ করার জন্য এবং কী অসাধারণ ফিনিশ করেছিল সহাল! সেই গোলের স্মৃতি আমাদের সবার মনেই অনেক দিন রয়ে যাবে। কারণ, সেই গোলটাই আমাদের এশিয়ান কাপের মূলপর্বে তুলে দিয়েছিল, তাও আবার টানা দ্বিতীয়বার, যা আগে কখনও হয়নি”।