
নিজস্ব সংবাদদাতা : আবারও গর্বিত ত্রিপুরা। আবারও ইতিহাস রচনা করল ‘ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ’। দেশজুড়ে আলোড়ন তুলে এবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল। সাড়া ফেলল গোটা এশিয়া মহাদেশে। “ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস”-এর পর এবার “এশিয়া বুক অফ রেকর্ডস”-এর স্বীকৃতি লাভ করল রাজ্যের এই মেডিকেল কলেজ।
শুক্রবার সকালে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয় এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। এশিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এর পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত মুখোশ শিল্পী সঞ্জয় ভোলাধীর। তিনি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ সঞ্জয় নাথ এবং সহ-সভাপতি সৌগত পীট-এর হাতে তুলে দেন এই সম্মাননা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ও স্থানীয় বিষয়ক শ্রী রামপ্রসাদ পাল।
এশিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এর তরফে জানানো হয়েছে, “ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ একটি নজিরবিহীন রেকর্ড গড়েছে, যেখানে একেবারে প্রথম শিক্ষাবর্ষেই সর্বাধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী ভারতের ২১টি রাজ্য থেকে ভর্তি হয়েছে।” প্রতিনিধি সঞ্জয় ভোলাধীর জানান, “এশিয়ার ৪৮টি দেশের কোনও নবনির্মিত মেডিকেল কলেজ এই ধরনের বৈচিত্র্য ও পরিসরে প্রথম বর্ষেই ছাত্রছাত্রী ভর্তি করাতে সক্ষম হয়নি। এটি এক ঐতিহাসিক মাইলস্টোন।”
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কলেজে ভর্তি হয়েছে ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, কেরালা, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, ওডিশা, ঝাড়খণ্ড, নাগাল্যান্ড, দিল্লি, পাঞ্জাব, অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচলপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং উত্তরাখণ্ড— এই ২১টি রাজ্য থেকে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে শুধুমাত্র ত্রিপুরা থেকেই ভর্তি হয়েছে সর্বাধিক ৪৭ জন ছাত্রছাত্রী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডেপুটি স্পিকার রামপ্রসাদ পাল বলেন, “ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ এক ‘মিনি ভারতবর্ষ’-এর রূপ নিয়েছে। ২১টি রাজ্য থেকে ছাত্রছাত্রী এসেছে এখানে পড়তে। এটি আমাদের রাজ্যের জন্য গর্বের বিষয়।”
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডঃ মলয় পীট বলেন, “এই সম্মান কোনও ব্যক্তিগত অর্জন নয়। এটি ত্রিপুরার, এটি গোটা দেশের গর্ব। এই স্বীকৃতি প্রমাণ করে, আমরা শুধু একটি কলেজ তৈরি করিনি, তৈরি করেছি এক নতুন মানদণ্ড। এই কলেজ এশিয়ার মেডিকেল শিক্ষাক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।”
এদিন কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ২১টি রাজ্যের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জীবনচর্চাকে তুলে ধরে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা উপস্থাপন করে।