
সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, নবান্নঃ পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন দাখিল থেকে শুরু করে, ভোট পরবর্তী হিংসা জারি ভাঙড়ে। গণনার দিনও পড়ল বোমা চলল গুলি। মৃত তিন, অহত দু’ই পুলিশ কর্মী সহ একাধিক। আর এবার ভাঙড়ে অশান্তি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যা। এক হাত নিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “ভাঙড়ে গন্ডগোল ছড়াল কীভাবে? ওখানে তো কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। পুলিশ কীভাবে গুলিবিদ্ধ হল?”
বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন “হিংসা চাইনি, তা সত্ত্বেও বহু মানুষ পরিস্থিতির শিকার”। বৈঠকে ভাঙড়ের অশান্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। মমতা বলেন গণনা কেন্দ্রের বাইরে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়েছিল। দুষ্কৃতীদের জড়ো করেছিল। তারা গুলি-বোমা ছুঁড়েছে, বলে দাবি করেন মমতা। তিনি আরও বলেন, পুলিশ গুলিবিদ্ধ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল সেখানে, তারপরেও কেন অশান্তি ছড়াল। তিনি আরও বলেন, “ভাঙড়ে তো আমরা জিতিনি। ওখানে মহাঘোট হয়েছিল। আরাবুল জেতেনি। ওঁরটা হার ছিল না। তবু তো কিছু বলিনি। একটা দু’টো আসনে আমার কিছু আসে যায় না।” মমতার দাবি, ভাঙড়ে গণনায় তৃণমূল প্রার্থী জিতে গিয়েছিল। কিন্তু বিডিওকে দিয়ে অন্যের জয় লিখিয়ে নেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী আরও দাবি করেছেন, ভাঙড় আজ থেকে নয়, দীর্ঘদিন ধরেই অশান্ত। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ গ্রিড বসানোর সময় থেকেই ভাঙড় অশান্ত। মমতা বলেন “কে বা কারা সেখানে দিয়ে অশান্তি ছড়াচ্ছে, সবাই জানে।” তিনি কার্যত, অশান্তির দায় চাপালেন বিরোধীদের কাঁধে। বললেন, “আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের লক্ষ্য শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা।”
মমতা বললেন, “কোনও মৃত্যুই কাম্য নয়। তবে বেশিরভাই মৃত্যু হয়েছে আমাদের কর্মীর। ১৯ জনের প্রাণ গিয়েছে।”তাঁর দাবি, রাজ্যের মাত্র দুটি জেলায় অশান্তি হয়েছে। কিন্তু মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে বিরোধীরা। সকলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আমার আবেদন শান্তি, সম্প্রীতি বজায় রাখুন। বাংলা ভাঙতে দেব না। বিজেপির প্ররোচনায় পা দেবেন না।”
সিপিআইএম-কংগ্রেসকেও এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে নিশানা করেন মমতা। তাঁর দাবি, বিরোধীরা চায়নি ভোট হোক। এখনও আদালতে ছুটছে। হেরেছে কিন্তু সেটা মানতে পারছে না। মমতা আরও বলেন, “সাধ্য মতো চেষ্টা করেছি। যদি নবজোয়ার করে মানুষের ঘরে ঘরে শান্তির বার্তা না দেওয়া হত তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত। যা ঘটেছে চেষ্টা করব আগামীতে যেন না ঘটে।”
সাংবাদিক বৈঠক থেকে, পঞ্চায়েত ভোটে হিংসায় নিহতদের পরিবারপিছু আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ও পরিবারের একজনকে হোমগার্ডের চাকরির কথা ঘোষণা করেন তিনি।