
অমিত দাস, কলকাতাঃ চাকরি ফেরত পেতে মরিয়া তিনি। ফের হাই কোর্টের দ্বারস্থ চাকরিহারা স্কুলশিক্ষিকা ববিতা সরকার। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলা দায়ের করলেন ববিতা। আগামিকাল অর্থাৎ শুক্রবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
গত ২০২২’র জুলাই মাসে তৎকালীন রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ বেআইনি বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন ববিতা সরকার। আদালতে তাঁর বক্তব্য ছিল, ওই চাকরির যোগ্য দাবিদার তিনি। মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা তা দখল করেছেন।
হাই কোর্টের ববিতার অভিযোগ প্রমাণের পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি খারিজ হয় অঙ্কিতার। সেই জায়গায় চাকরি পান ববিতা। শুধু তাই নয়, অঙ্কিতার ৪৩ মাসের বেতনের টাকাও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেই টাকা ববিতাকে দেওয়া হয়। কিন্তু ববিতা চাকরি পাওয়ার কয়েকমাস পর তাঁর নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। অনামিকা রায় নামে আরও এক চাকরী প্রার্থী য়াদলতে দাবি করেন, ববিতার প্রাপ্ত নম্বর ৬০ শতাংশ নয়। অথচ তিনি ৬০ শতাংশ লিখেছেন ফর্মে। তাতেই ববিতার অ্যাকাডেমিক স্কোর বেড়ে গিয়েছে। ববিতার থেকে নম্বর তাঁর বেশি বলে আদালতে দাবি করেন অনামিকা। ফের শুরু হয় মামলা। যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে ববিতা সরকারের সুপারিশপত্র বাতিল করে পর্ষদ। চাকরি হারান ববিতা। অনামিকা রায় সেই চাকরি পান ।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেন কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন চাকরিহারা স্কুলশিক্ষিকা ববিতা সরকার। সেই মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। তারই মাঝে ফের নতুন করে আদালতের দ্বারস্থ ববিতা সরকার। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ২০১৬ সালের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র এবং বিস্তারিত মেধাতালিকা প্রকাশের আবেদন জানিয়েছেন ববিতা। বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বক্তব্য জানতে চেয়েছেন বিচারপতি।
এদিন আদালতে ববিতার আইনজীবী জানান, ২০১৬ সালের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৫,৫০০ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। পরে নিয়োগ মামলার তদন্তে ৯০৭টি বিকৃত ওএমআর শিট উদ্ধার করে সিবিআই। তার মধ্যে ১৩৮ জন ছিলেন ওয়েটিং লিস্টে। ববিতার আবেদন, একাদশ-দ্বাদশের বিস্তারিত তথ্য-সহ প্যানেল প্রকাশ করা উচিত। তা হলে কারা, কী ভাবে, কোথায় চাকরি পেয়েছেন, তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। শুক্রবার মামলার শুনানি হতে পারে।