
নিজস্ব সংবাদদাতা : প্রয়াত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা। বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। এই সময়কালে তিনি ভাঙড়ের বাকড়ি গ্রামে নিজের বাড়িতেই থাকতেন। সেখানেই শুক্রবার সকালে তাঁর জীবনাবসান হয়। শেষ বয়সে রেজ্জাক মোল্লা সক্রিয় রাজনীতি থেকেও দূরেই ছিলেন। অবশেষে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। ‘চাষার ব্যাটা’র মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল।
রাজনৈতিক মঞ্চে রেজ্জাক মোল্লার আবির্ভাব হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। বামফ্রন্টের উত্থানের একদম শুরুতেইয়। ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়ে যাত্রা শুরু করেন রেজ্জাক মোল্লা। টানা ২০১১ সাল পর্যন্ত ওই একই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তিনি। রাজ্যে বামফ্রন্টের সরকারের পতনের সময়েও রেজ্জাকের গড় অটুট ছিল।
দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারে তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের দায়িত্বও সামলেছেন। ২০১৪ সালে তাঁর রাজনৈতিক জীবনে আসে সেই চাঞ্চল্যকর মোড়, সিপিএম রাজ্য কমিটি তাঁকে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে বহিষ্কার করে। দলচ্যুত হওয়ার পরে তিনি নিজেই একটি নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করেন—‘ভারতীয় ন্যায়বিচার পার্টি’। নিজেকে পরিচয় দেন ‘চাষার ব্যাটা’ বলে।
তবে খুব বেশিদিন নিজের দলকে এগিয়ে নিয়ে যাননি তিনি, অল্প দিনের মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়। ২০১৬ সালে তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর ভাঙড় কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হন। মমতা মন্ত্রীসভায়ও যোগ দেন। দায়িত্ব পান খাদ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের।

রেজ্জাক মোল্লার মৃত্যুর খবর পেয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘একসময় অন্য ধারার রাজনীতি করলেও, মা-মাটি-মানুষের সরকারে তাঁর মিলিত হয়ে যাওয়া ছিল সহজ ও স্বাভাবিক।’
বয়সজনিত কারণে তাঁকে আর ২০২১ সালের নির্বাচনে প্রার্থী করেনি তৃণমূল। দলের সঙ্গে কিছুটা দূরত্বও তৈরি হয় তখন থেকেই। শরীরের অবস্থা দ্রুত অবনতি হওয়ায় তিনি ধীরে ধীরে রাজনীতি থেকে সরে আসেন।