
স্পোর্টস ডেস্ক : অবিশ্বাস্য! দানবীয় ইনিংস। ১২৮ বলে ২০১ রানে অপরাজিত গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। বিধ্বংসী ইনিংসে ১০টি ছয়, ২১টি চার। শেষ ওভারে ৬, ৬, ৪, ৬। সব ফরম্যাটের ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ইনিংসের মধ্যে থাকবে। বিশ্বকাপে যেকোনও অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারের সর্বোচ্চ রান। বিশ্বকাপের ইতিহাসে তৃতীয় দ্বিশতরান। না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। বিশ্বক্রিকেটকে চমকে দিলেন ম্যাড ম্যাক্স। পাগলের মতো খেললেন। দলের ২৯৩ রানের মধ্যে ২০১ রান তাঁর। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একার হাতে জেতালেন। একটা সময় দৌড়তেই পারছিলেন না। দাঁড়িয়ে থেকেই একের পর এক ছক্কা এবং চার হাঁকিয়ে দলকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিলেন। খাদের কিনারা থেকে অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচে ফেরালেন। অসম্ভবকে সম্ভব করে তুললেন ম্যাক্সওয়েল অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বললেন,কী বলব, অসম্ভব! এই ইনিংসকে কী ভাবে বর্ণনা করা উচিত জানি না। ম্যাক্সি যেন ভিন গ্রহের। ওডিআই ক্রিকেটের ইতিহাসে এটাই সেরা ইনিংস।’ একটা সময় অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনা এক শতাংশেরও কম ছিল। পুরো পরিস্থিতিই বদলে দেন ম্যাক্সওয়েল।এটা এমনই একটা ম্যাচ, যখন কেউ গর্ব করে বলতে পারবে, ওই ম্যাচটায় আমি মাঠে ছিলাম। নিজেদের খুব লাকি মনে হচ্ছে।’ পার্টনারশিপ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই কামিন্স মজা করে বলেন, ‘আমি তো স্ট্রাইকই পাচ্ছিলাম না। শুধু ম্যাক্সির খেলা দেখেছি বলতে পারেন। মানে এই পার্টনারশিপ নিয়ে কীই বা বলতে পারি?’ কামিন্স যেন বোঝাতে চাইলেন, পুরোটাই ওয়ান ম্যান শো। ম্যাক্সি ম্যাজিক।’রান তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া। তারা মাত্র ৯১ রানের মধ্যেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে। ওপেনার ট্র্যাভিস হেড ০ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ২৯ বলে মাত্র ১৮ রান করে আউট হন। মিচেল মার্শ শুরুটা খুব ভালোভাবে করেছিলেন, কিন্তু তিনি সেটিকে বড় ইনিংসে রূপান্তরিত করতে পারেননি। তিনি ২টি চার এবং ২টি ছয় সহ ১১ বলে ২৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। মার্নাস ল্যাবুশেন ২৮ বলে ১৪ রান করে রান আউট হন। জশ ইঙ্গলিস এই ম্যাচে রানের খাতা খুলতে পারেননি। মার্কাস স্টোইনিসও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন। তিনি ৭ বলে ৬ রান করতে সক্ষম হন। মিচেল স্টার্ক ৭ বলে মাত্র ৩ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।
অস্ট্রেলিয়া মাত্র ৯১ রানের মধ্যেই ৭টি উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। তবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ইনিংসের সামনে আফগানিস্তানকে হারতে হয়। তিনি খেলার মাঝে চোটও পেয়েছিলেন। কিন্তু তাও তিনি মাঠ ছাড়েননি। শেষমেশ ১২৮ বলে অপরাজিত ২০১ রান করে অপরাজিত থেকে যান তিনি। ৪৬.৫ ওভারে ৭ উইকেটে ২৯৩ রানে পৌঁছে ম্যাচটি জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। নবীন-উল-হক, রশিদ খান এবং আজমতউল্লাহ ওমরজাই ২টি করে উইকেট নেন। এই ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কার পান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের দুর্ধর্ষ দ্বিশতরান অস্ট্রেলিয়াকে এই জয় এনে দেয়।
এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজের ব্যাট থেকে ২১ রান আসে। আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ১৪৩ বলে অপরাজিত ১২৯ রানের একটি অনবদ্য ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসে ছিল ৮টি চার এবং ৩টি ছয়। রহমত শাহ এবং হসমতউল্লাহ শাহিদী যথাক্রমে ৪৪ বলে ৩০ রান এবং ৪৩ বলে ২৬ রান করেন। জাদরান এবং রহমতের মধ্যে ৮৩ রানের একটি সুন্দর পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে।