
নিজস্ব সংবাদদাতা , দক্ষিণ দিনাজপুর : আজ বাদে আগামীকাল জামাইষষ্ঠী। বাড়ির বড়দের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে প্রস্তুতির কথা। জামাই আদরের বারো মাসে তেরো পার্বণের অন্যতম এই দিনটিতে পাটে শাড়ি, পানতার সঙ্গে রসে ভেজা রসগোল্লা, আর জামাইয়ের প্রিয় খাবারের তালিকা তো আছেই। তবে এ বছর একটু অন্য ছোঁয়া এনেছে বালুরঘাটের বাজার।
সাধারণ কুলার বা সাজসজ্জার জিনিস নয়, এ বার নজর কেড়েছে হাতে রং লাগানো, নানান কারুকাজে মোড়ানো সড়া ও পাখা। আধুনিকতার ছোঁয়ায় উঠে এসেছে ট্র্যাডিশনের নতুন রূপ। দেখা গেল, বালুরঘাট সৃজনী ক্লাবের পাশে ঢাকা কলোনীতে ব্যস্ত একদল তরুণ-তরুণী, যাঁরা হাতে বানাচ্ছেন এই অনন্য শিল্পকর্ম। নিখুঁত তুলির টানে ফুটে উঠছে সোনারঙা আলপনা, ফুলপাখির মোটিফ, আর কখনও বা ভিন্টেজ লোকশিল্পের ছাপ।
এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছেন শিল্পী দেব হালদার। বললেন, “জামাইষষ্ঠী শুধু একটা উৎসব নয়, এটা আবেগ। আমরা চেয়েছি, এই আবেগকে রঙে রঙে ছড়িয়ে দিতে। পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের জন্য একটা স্বনির্ভরতার দিশা দেখাতেও এই প্রয়াস।”
শুধু বাঙালি সংস্কৃতি নয়, এই হস্তশিল্পের মধ্যে মিশে যাচ্ছে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও। কলকাতা, শিলিগুড়ি থেকে আসা ক্রেতারাও খুশি। তাঁরা বলছেন, দোকানের সজ্জায় কিংবা জামাইয়ের উপহারে এমন হাতের তৈরি জিনিস থাকলে উৎসবের রঙ আরও গাঢ় হয়।
বিশ্বায়নের যুগে যখন প্লাস্টিক আর মেশিন-তৈরি জিনিসে বাজার সয়লাব, তখন বালুরঘাটের এই রঙিন সড়া আর পাখা যেন টাটকা বাতাসের ঝাপটা।
উৎসবের মরশুমে এ ভাবেই নিজের শিকড়ে ফেরার ডাক দিচ্ছে বালুরঘাট। জামাই আদরে থাকুক এই রঙিন ছোঁয়া — স্নেহ, শিল্প আর সংস্কৃতির মেলবন্ধনে।