
প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী, আগরতলাঃ রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বড় সমস্যার কারণ হয়ে উঠছে ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্ব ভারতে। এই রোহিঙ্গাদের মদতেই নিষিদ্ধ নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে যুব সমাজের এক অংশ। চলতি বছর জুলাই পর্যন্ত শুধুমাত্র ত্রিপুরা থেকে গ্রেফতার হয়েছে ৫২ জন রোহিঙ্গা।
ত্রিপুরায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি দাবি করেছিলেন, মানবপাচারকারীরা ত্রিপুরা হয়ে রোহিঙ্গাদের অসমে নিয়ে আসছে। এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে হিমন্ত বিশ্বশর্মা স্পষ্ট করে জানান, “পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়া যারা ভারতে প্রবেশ করছে তারা এ দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ উদ্বেগজনক। মানবপাচারকারীরা ত্রিপুরায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসছে। সেখান থেকে অসম ও দেশের অন্যান্য প্রান্তে পাচার করে দিচ্ছে।” অসমের মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে আরো বলেছিলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে অসমের পুলিশ প্রশাসন ত্রিপুরা সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ শুরু করছে। হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, “কেউ রোহিঙ্গা হোক বা না হোক, কিংবা হিন্দু-মুসলিম যেই হোক না কেন, বিনা পাসপোর্ট বা ভিসায় ভারতে অনুপ্রবেশ করলে তা বেআইনি বলেই গণ্য হবে। আমরা কোনও বেআইনি কার্যকলাপ বরদাস্ত করব না।”
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র দাবি করে, মায়ানমার থেকে কমপক্ষে ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা তাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার দাবি, বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরা ও অসম হয়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে রোহিঙ্গা একাংশ। সর্বভারতীয় একটি সংবাদপত্রের দাবি, দিল্লির শরণার্থী শিবিরেও বাড়ছে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, এদের মধ্যে অনেকেই জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তাই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবার রোহিঙ্গাদের হাত ধরেই নেশা জাতীয় দ্রব্যের জাল বিস্তার করেছে ত্রিপুরা, অসম সহ একাধিক রাজ্যে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ত্রিপুরায় রোহিঙ্গাদের মদতে বাড়ছে নেশার প্রবণতা। ত্রিপুরা এক অংশের যুব সমাজ কার্যত নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা নেশার বিরুদ্ধে একাধিক সামাজিক কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন। চলছে ব্যাপক ধরপাকড়।
ত্রিপুরার শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক মঞ্চক ইপ্পার জানিয়েছেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছি। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে একাধিক মামলা রুজু হয়েছে। চলতি বছর এখনো পর্যন্ত ৫২ জন রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করেছে ত্রিপুরা পুলিশ। যারা রোহিঙ্গাদের সাহায্য করছে তাদেরও খোঁজ করা হচ্ছে।