
নয়ন বিশ্বাস রকি, সাবেক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেতা : আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১৭ মে। দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের এই দিনে ১৭ ই মে দেশে ফিরেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নৃশংস ভাবে নিহত হওয়ার সময় শেখ হাসিনা ছিলেন জার্মানিতে তার স্বামীর কাছে। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহেনা ও। এ কারণে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা। পরবর্তী সময়ে তাদের ঠাঁই হয়ে প্রতিবেশী ভারতে। এক পর্যায়ে শেখ রেহেনা লন্ডনে চলে যান। আর ভারতের নয়া দিল্লিতে নির্বাসিত জীবন কাটে শেখ হাসিনার।
সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ ভূমিতে ফিরেন শেখ হাসিনা। ততদিনে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তার স্বদেশে ফেরার ওই দিন রাজধানীর ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। তুমুল বৃষ্টি ও জড়ো হাওয়া উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে এক নজর দেখার জন্য বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর এলাকাজুড়ে ঢল নামে মানুষের। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু; শেখ হাসিনার আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম স্লোগানে মুখরিত হয়ে ঢাকা। জনতার কন্ঠে বজ্রনিনাদে সেই দিন ঘোষিত হয়েছিল “হাসিনা তোমায় কথা দিলাম পিতৃ হত্যার বদলা নেব, ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে”। সেই দিন বাংলার দুঃখী মানুষের সর্বস্তরের জনগণের উদ্দেশ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয়ের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সবকিছু হারিয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি। আমার আর হারাবার কিছু নেই….। বাংলার দুঃখী মানুষের সেবায় আমি আমার এ জীবন দান করতে চাই।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কাল রাতে ঘাতকরা ইতিহাসের নূশংসতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলণ্ঠিত করে বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমন প্রতিকূল সময় ওই বছর ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫,ও ১৬ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ অবস্থায় তিনি সব রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজের দেশের মাটিতে পা রাখেন। কিন্তু দেশে ফেরার পর শেখ হাসিনার পথ মসৃণ ছিল না। নানা ঘাতপ্রতি আঘাত পেরিয়ে তাকে আসতে হয়েছে। তার দৃঢ়তায় বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশে হাজার হাজার উন্নয়নমূলক দৃশ্যমান কাজ হয়েছে, হাজার হাজার গৃহহীন মানুষকে বাসস্থান করে দিয়েছে্ শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাতে, বিদ্যুৎ খাতে সর্বোপরি উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে তার নেতৃত্বে। এখন তিনি জাতির পিতার আদর্শ স্বপ্ন বাস্তবায়নে অবিরাম পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ সব প্রতিকূলতা এবং দুর্যোগ মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ অধ্যাপক মোঃ ইউনুস-এর অপসাশনে আওয়ামী লীগের উপর যে নির্যাতন নেমে এসেছে সেখান থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তারা নেতৃত্বের প্রতি বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ এবং সংগঠন আস্থাশীল।