
ওঙ্কার ডেস্ক: বুধবার ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ২৭ জন মাওবাদী। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া মাওবাদীর সাধারণ সম্পাদক নামবালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু। বিটেক ইঞ্জিনিয়ার বাসবরাজুর মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছিল ২ কোটি টাকার বেশি।
২০১৭ সালে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া মাওবাদীর সাধারণ সম্পাদক হন বাসবরাজু। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার জিয়ানাপেটায় খুব সাধারণ পরিবারে বাসবরাজুর জন্ম। তাঁর উচ্চতা ছিল ৬ ফুট। গায়ের রঙ মোটামুটি ফরসা। অবুঝমাড়েই থাকতেন ওই মাওবাদী নেতা। সঙ্গে রাখতেন একে ৪৭। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ওয়ারাঙ্গলের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বিটেক পাশ করেন বাসবরাজু। অন্ধ্রপ্রদেশের হয়ে জাতীয় মিটে ভলিবল খেলেছিলেন তিনি। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একবারই গ্রেফতার হয়েছিলেন এই নেতা। সালটা ছিল ১৯৮০। এবিভিপির সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে সে সময় তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বাসবরাজুর নেতৃত্বে ২০১৮ সালে সুকমা আইইডি বিস্ফোরণ হয় সে সময় সিআরপিএফের একটি গাড়ি ধ্বংস হয়ে ৯ আধা সেনা নিহত ও ৬ জন জখম হন। ২০১৯ সালে ল্যান্ডমাইন ফাটিয়ে পুলিশের একটি গাড়ি ধ্বংস করা হয় মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ এলাকায়। তাতে ১৬ জন নিহত হন। এছাড়া ২০২১ সালে সুকমা-বিজাপুরে বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ২২ জন নিরাপত্তা রক্ষীর মৃত্যু হয় ও জখম হন ৩২ জন। ২০২৩ সালে মাইন বিস্ফোরণের ফলে ১০ ডিআরজি কর্মী ও গাড়িচালকের মৃত্যু হয়। ২০২৫ সালে বিজাপুর আইইডি বিস্ফোরণের জেরে ৮ ডিআরজি কর্মী ও এক গাড়িচালক নিহত হন। এই সমস্ত ঘটনার পিছনে বাসবরাজুর হাত ছিল বলে দাবি।
বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ নিরাপত্তা বাহিনীর এই অভিযান নিয়ে সমাজ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘নকশালবাদ নির্মূলের যুদ্ধে এক যুগান্তকারী সাফল্য। আজ, ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুরে এক অভিযানে, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী ২৭ জন ভয়ঙ্কর মাওবাদীকে নিষ্ক্রিয় করেছে, যার মধ্যে রয়েছে সিপিআই-মাওবাদীর সাধারণ সম্পাদক, শীর্ষ নেতা এবং নকশাল আন্দোলনের মেরুদণ্ড নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু। নকশালবাদের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধের তিন দশকের মধ্যে এটিই প্রথম যে আমাদের বাহিনী সাধারণ সম্পাদক পদমর্যাদার একজন নেতাকে নিষ্ক্রিয় করেছে। এই বড় সাফল্যের জন্য আমি আমাদের সাহসী নিরাপত্তা বাহিনী এবং সংস্থাগুলিকে সাধুবাদ জানাই।’
শাহ আরও লিখেছেন, ‘এছাড়াও জানাতে পেরে আনন্দিত যে অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট সম্পন্ন হওয়ার পর, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্রে ৫৪ জন নকশালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৮৪ জন নকশাল আত্মসমর্পণ করেছে। মোদী সরকার ৩১শে মার্চ ২০২৬ সালের আগে নকশালবাদ নির্মূল করার জন্য বদ্ধপরিকর।’