
ওঙ্কার ডেস্কঃ দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ফের একবার ভারতীয় ফুটবলের মানচিত্রে সেরার আসন দখল করল বাংলা। দীর্ঘ ৮ বছর পর সন্তোষ ট্রফির চ্যাম্পিয়ন হল বাংলা। ফাইনালে কেরলকে ১-০ গোলে হারাল সঞ্জয় সেনের ছেলেরা। ম্যাচের একেবারে শেষমুহূর্তে গোল করলেন রবি হাঁসদা। টুর্নামেন্টে ১২টি গোল করে মহম্মদ হাবিবের শহরে হাবিবেরই রেকর্ড ভাঙলেন তিনি।এনিয়ে ৩৩ বার সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হল বাংলা। শেষবার সন্তোষ ট্রফি বাংলার ঘরে এসেছিল ২০১৬-১৭ সালে। তারপর থেকে শুধুই ব্যর্থতা। গত কয়েক বছর ধরে সেই বাংলা সন্তোষ থেকে ফিরেছে শূন্য হাতে। দুবার ফাইনালে উঠেও হারতে হয়েছে বাংলাকে। অবশেষে এল সেই সাফল্য।কিন্তু বাংলার এই জয়কে ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন রাজনৈতিক তরজা। সমাজমাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস থেকে শুরু করে কুনাল ঘোষ-সহ অন্য তৃণমূল নেতারা শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়েছে, বাংলার দলকে। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া বাকি প্রায় সমস্ত তৃণমূল নেতাই তাঁদের পোস্টে ব্যবহার করেছেন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, কেউ আবার লিখেছে ‘খেলা হবে’।
বুধবার বিমানবন্দরে খেলোয়াড়রা ফিরলে ভিড়ের মধ্যে থেকে শোনা যায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। এই বিষয়কে নিয়েই রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে নতুন রাজনৈতিক তরজা। বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকদের বক্তব্য, তৃণমূল তাদের রাজনৈতিক স্লোগানকে প্রচার করতে সন্তোষ ট্রফির জয়কে ব্যবহার করছে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম কটাক্ষ করেন, “জয় বাংলা আর বাংলার জয় এক নয়। বাংলা দলকে ‘মমতা একাদশ’ বলে উল্লেখ করেনি, এই কত!” রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র তরুণজ্যোতি তিওয়ারি জানান, ‘‘বাংলা সন্তোষ ট্রফিতে জিতেছে, এটা আনন্দের বিষয়। তবে এর মধ্যে রাজনীতি আনা উচিত নয়। কিন্তু তৃণমূল তো তৃণমূলই। অন্নপ্রাশন থেকে শ্রাদ্ধ— সবেতে রাজনীতি জুড়তে চায়। এখানেও তাই করেছে।’’
অবশ্য বিরোধীদের এই কটাক্ষতে কান দিতে নারাজ তৃণমূল, কুনাল ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘সন্তোষ ট্রফি জিতেছে কে? বাংলা। তা হলে ‘জয় বাংলা’ বলব না তো কী বলব? যাদের গায়ে লাগছে তারা বুঝুক। আমাদের কিছু যায়-আসে না।’’
তবে খেলার মধ্যে এই রাজনৈতিক তরজা নিয়ে মোটেও খুশি নন প্রাক্তন ফুটবলাররা ।তাঁদের দাবি খেলার মধ্যে রাজনীতির রং মেশানো উচিত নয়, এই ধরণের ঘটনা খেলোয়াড়দের মনে প্রভাব ফেলে। আবার প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য এর মধ্যে কোনও অন্যায় দেখছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলা জিতলে ‘জয় বাংলা’ বললে অসুবিধা আছে? এটাকে রাজনৈতিক স্লোগানের মোড়কে দেখা ঠিক হবে না।’’
ভিডিও দেখুন-