
ওঙ্কার ডেস্কঃ ভোপাল অভিশাপের ঘেরাটোপ থেকে অবশেষে মুক্তি পেল ৪০ বছর পর। প্রায় চার দশক ধরে জিইয়ে ছিল গ্যাস দুর্ঘটনার ভয়াবহ মরণস্মৃতি। শত চেষ্টার পর অবশেষে পুরোপুরিভাবে সরল মিথাইল আইসোসায়ানেটের বিষাক্ত বর্জ্যও। ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানা থেকে ৩৩৭ মেট্রিক টন হানিকারক বর্জ্য সরানো হয়েছে। ১২টি কন্টেনারে এই কেমিক্যাল বর্জ্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কন্টেনারগুলি ‘লিক প্রুফ’ এবং কোনওভাবেই আগুন ধরবে না।
সম্পূর্ণ সুরক্ষাবিধি মেনে বর্জ্য স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ৩০ টন করে বর্জ্য প্রতিটা কন্টেনারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানান্তরণের কাজে ব্যাবহার করা হয়েছে ১০০ জন শ্রমিককে। প্রত্যেক শ্রমিক কাজ করেছেন ৩০ মিনিট ধরে, কারণ ৩০ মিনিটের বেশি কেমিকাল বর্জ্যের সামনে থাকা ক্ষতিকর।
ভোপাল থেকে প্রথমে মধ্যপ্রদেশের শহর, তারপর সেখান থেকে দেওয়াস হয়ে পিথমপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সমস্ত রাস্তায় এবং তার পার্শ্ববর্তী ২০০ মিটার এলাকায় কার্যত লকডাউন চালু করে দেওয়া হয়েছিল। বর্জ্য নিয়ে যাওয়ার জন্যে ছিল ১২টি গাড়ি সঙ্গে ছিল ২৫ টি গাড়িতে নার্স, চিকিৎসক এবং তৎক্ষণাৎ আপৎকালিন পরিষেবা প্রদানের জন্যে সকল জরুরি সরঞ্জাম। নিরাপত্তার জন্যে একহাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে শীতঘুমের মাঝেই চিরনিদ্রায় ডুবে যায় সহস্র প্রাণ। ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানা থেকে বিষাক্ত মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস লিক করে ছড়িয়ে পড়তে থাকে পার্শ্ববর্তী এলাকায়। নিমেষে মৃত্যু ঘটে অজস্র নিরীহ প্রাণের। সরকারি মতে মৃত্যুর সংখ্যা ৪ হাজার হলেও আদতে তা ১০ হাজারেরও বেশি। ৪০ বছরের ঘটনার রেশ এখনও বয়ে নিয়ে যাচ্ছে ভোপালের পরবর্তী প্রজন্ম। বর্জ্য সরানোর জন্যে চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। পিথমপুরে গিয়ে বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।