
বিপ্লব দাশ, কনটেন্ট হেড: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিংয়ের প্রয়াণের পরে শেষকৃত্য নিয়ে রাজনীতি। সেই রাজনীতির জাঁতাকলে পড়ে রাজনৈতিক সৌজন্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। এখন প্রশ্ন কংগ্রেস কেন মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুর পর তাঁর শেষকৃত্যের জায়গা ও স্মৃতিসৌধ নিয়ে তরজায় নামল? মনমোহনের পরিবার শেষকৃত্য় নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ করেনি। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাও ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পর কংগ্রেস তাঁদের প্রতি যথাযথ সম্মান দেয়নি। এমনকী নরসীমা রাওয়ের স্মৃতিসৌধ তৈরি তো দূরের কথা, তাঁর মৃতদেহ কংগ্রেসের সদর দপ্তরে নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি। হায়দরাবাদে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল।
এদিকে কংগ্রেসই ডঃ মনমোহন সিংয়ের মৃত্যু পর বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলছে। এর পিছনে সূক্ষ্ম রাজনৈতিক চাল রয়েছে কংগ্রেসের। সামনেই দিল্লি বিধানসভার ভোট। দিল্লিতে শিখ ধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যাও যথেষ্ট। তাই কখনও শেষকৃত্য়ের স্থান, কখনও স্মৃতিসৌধ, আবার কখনও বা শেষকৃত্যে মনমোহনের পরিবারের সদস্যদের বসার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শিখ সহানুভূতির লাভের প্রচেষ্টা কংগ্রেসের। যা আগামী দিল্লি ভোটের কংগ্রেসের শিখ ভোটব্যাঙ্ককে মজবুত করবে।
ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর শিখনিধন নিয়ে কংগ্রেসকে বারবার কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। ১৯৮৪ সালে ৩১ অক্টোবর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর শিখ আততায়ীর গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। তারপর বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেস নেতাদের প্ররোচনায় যে শিখনিধন হয়েছিল, তা আজও ভোলার নয়। সেই ঘটনার প্রলেপ দিতেই কী মনমোহনের প্রয়াণকে হাতিয়ার করল কংগ্রেস? প্রশ্ন এও।
মনমোহন নীরবে ‘মৌনব্রত’ অবলম্বন করে কাজের মাধ্যমে সমালোচনার জবাব দিয়েছেন তাঁর নিন্দুকদের। তাঁর আমলেই উদার অর্থনীতি ও ভারতের উন্নয়নের যে কাজ হয়েছিল, সেগুলি কি ধামাচাপা পড়ে গেল না? ‘দিল্লির ভোট’ আর ‘শিখনিধন’ এই দুই ঘটনাকে হাতিয়ার করে শিখ ধর্মাবলম্বীদের সহানুভূতি টানার চেষ্টা করে মনমোহন সিংকে খাটো করল কি কংগ্রেস!