
স্পোর্টস ডেস্ক :গোয়ায় সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে এফসি গোয়ার কাছে হেরেও আইএসএল ২০২৪-২৫-এর ফাইনালে উঠে পড়ল বেঙ্গালুরু এফসি। রবিবার ফতোরদার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে নিজেদের সমর্থকদের সামনে অসাধারণ জয় পেলেও স্বপ্নভঙ্গ হল এফসি গোয়ার। ২-১ জিতেও ফাইনালে ওঠা হল না তাদের।
ঘরের মাঠে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ২-০-য় জিতেছিল বেঙ্গালুরু। সেই জয়ের ফলে দুই লেগ মিলিয়ে মোট ৩-২-এর ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফাইনালে পৌঁছে গেল সুনীল ছেত্রীর দল। এই নিয়ে চতুর্থবার আইএসএল ফাইনালে উঠল তারা। এর আগে দু’বার ফাইনালে হেরে যায় তারা, একবার জেতে। অর্থাৎ, এ বার তাদের সামনে দ্বিতীয়বার কাপ জয়ের সুযোগ।সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ০-২-এ হেরে যাওয়ায় এফসি গোয়াকে ফাইনালে উঠতে গেলে এ দিন দ্বিতীয় লেগে অন্তত তিন গোলে জিততেই হত। তবে তারা দু’গোলে জিতলে ম্যাচ গড়াত অতিরিক্ত সময়ে। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বোরহা হেরেরার গোলে এগিয়ে যায় এফসি গোয়া। ম্যাচের ৭৫ মিনিটের মাথায় ডিফেন্ডার ওদেই ওনাইন্দিয়ার পরিবর্তে নামা আলবানিয়ান ফরোয়ার্ড আরমান্দো সাদিকু নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার দু’মিনিট আগে অসাধারণ এক গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন ও ম্যাচকে অতিরিক্ত সময়ের দিকে নিয়ে যান।
কিন্তু সংযুক্ত সময়ে সুনীল ছেত্রীকে নিজেদের গোলের সামনে ছেড়ে রাখার মাশুল দিতে হয় তাদের এবং এই বাড়তি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে দুর্দান্ত এক হেডে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দেন ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি। এই গোলের সঙ্গে সঙ্গেই স্বপ্নভঙ্গ হয় এফসি গোয়ার। এর আগে তিনবার সেমিফাইনালে উঠে হেরে গিয়েছে গোয়ার দল। এই নিয়ে চতুর্থবার একই ভাবে শেষ চারের রাউন্ড থেকে ছিটকে গেল তারা।
এ দিন সারা ম্যাচে এফসি গোয়ার আধিপত্যই ছিল বেশি। প্রায় ৬৩ শতাংশ বল তাদের দখলে ছিল। বেঙ্গালুরুর চেয়ে অনেক বেশি পাসও (৩৯১-২৪৯) খেলে তারা। মানোলো মার্কেজের দলের মোট ১৬টির মধ্যে দশটি শট ছিল লক্ষ্যে। সেখানে বেঙ্গালুরুর সাতটি শটের মধ্যে মাত্র দু’টি ছিল গোলে। গোয়ার দলের ৩৭টি ক্রসের তুলনায় আটটি ছিল বেঙ্গালুরুর। কিন্তু আসল কাজের কাজটি করে ফেলেন সুনীল ছেত্রী। ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে অসাধারণ গোলটি করে।
ডানদিক থেকে এক অসাধারণ ও মাপা ক্রস পাঠান নামগিয়াল ভুটিয়া। যা দ্বিতীয় পোস্টের সামনে থেকে ডাইভ দিয়ে হেড করে জালে জড়িয়ে দেন সুনীল। এই নিয়ে চলতি মরশুমে ১৪ নম্বর গোল করে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় দুই নম্বরেই রয়ে গেলেন।
প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পরে ৪৯ মিনিটের মাথায় প্রতিপক্ষের বক্সের মাথা থেকে নেওয়া দর্শনীয় ফ্রি কিকে সোজা জালে বল জড়িয়ে দেন বোরহা হেরেরা। এই গোলের পর এফসি এক ঝাঁক গোলের সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করে। বেঙ্গালুরুকে এই সময় প্রায় কোণঠাসা করে দিয়েছিল তারা।
শেষে দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা আরমান্দো সাদিকুকে নামান কোচ মার্কেজ এবং ৮৮ মিনিটের মাথায় তিনি কোচের উদ্দেশ্য সফল করেন দুরন্ত এক গোল করে। আকাশ সাঙ্গওয়ানের অসাধারণ এক ক্রসে হেড করে জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি। এই গোলের সঙ্গে সঙ্গে দুই সেমিফাইনাল মিলিয়ে স্কোর ২-২ হয়ে যাওয়ায় ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ের দিকেই গড়াচ্ছিল। কিন্তু অতীতে যে ভাবে এক নিমেষে বহু ম্যাচের ছবি বদলে দিয়েছেন তিনি, সে ভাবে এ দিনও গোল করে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলে এনে ফাইনালে পৌঁছে দেন সুনীল ছেত্রী।