
শুভাশিস চট্টোপাধ্যায়ঃ লোকসভা ভোটের এখনও ৯ থেকে ১০ মাস বাকি। কিন্তু বেঙ্গালুরুতে ২ দিনের বিরোধী বৈঠকে শুরু হয়ে গেল তারই সলতে পাকানোর প্রস্তুতি। বিজেপির NDA বা ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক অ্যালায়েন্সের জোটের বিরুদ্ধে লড়তে এবার INDIA জোট গঠনের আলোচনা হল বেঙ্গালুরুতে। দেশের নাম ইন্ডিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে INDIA জোট গঠনের বিষয়ে বিরোধী নেতারা আলোচনা করেছেন বলে সূত্রের খবর। INDIA-র পুরো নাম ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক ইনক্লিসিভ অ্যালায়েন্স। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন UPA জোট গঠন করা হয়েছিল ২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে। কিন্তু কেন হঠাৎ ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স বা UPA জোট ছেড়ে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স তৈরির চিন্তা ভাবনা ? বিরোধী নেতৃত্বের মতে UPA জোটের নেতৃত্বে ছিল কংগ্রেস। কিন্তু এই নিয়ে কংগ্রেসের পরিবারবাদকে লাগাতার আক্রমণ করে আসছে বিজেপির ছোট বড় নেতা নেত্রী থেকে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহরা। ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে দুবার UPA জোটের নেতৃত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কুর্শি দখল করে কংগ্রেসই। কিন্তু এবার রাহুল গান্ধি থেকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গে বারবার বিরোধীদের বার্তা দিয়েছেন কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীর কুর্শি নিয়ে লালায়িত নয়, বিজেপিকে বিতাড়িত করে দেশে ‘গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠাই কংগ্রেসের একমাত্র লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী ঠিক করা হবে ভোটের পর সবার সঙ্গে আলোচনার পরই। বিরোধী শিবিরেরও অনেকের দাবি ছিল নাম পরিবর্তন করে আরও বড় জোট তৈরি করার। ফলে ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স বা UPA জোট ছেড়ে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক ইনক্লিসিভ অ্যালায়েন্স তৈরির চিন্তা ভাবনা।
সোমবার সোনিয়া গান্ধির নৈশভোজে কিছুক্ষনের জন্য উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ডিনার না করেই চলে যান। মঙ্গলবার বৈঠক যোগ দিতে ঢোকার সময় সাংবাদিকদের মমতা বলেন আশা করি ভাল বৈঠক হবে। বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হবে তা দেশের জন্য ভালো হবে। সোমবার বৈঠকের প্রথম দিন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার উপস্থিত না থাকলেও মঙ্গলবারের বৈঠকে যোগ দেন তিনিও।
এদিন বৈঠকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল যেমন তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেছেন মোদির ১০ বছরের শাসনকাল থেকে পরিত্রানের সময় এসে গেছে। এবার তাঁকে বিদায় নিতেই হবে। মঙ্গলবারের বৈঠকে অভিন্ন কর্মসূচীর খসড়া, ইভিএম মেশিনে ভোট, লোকসভায় আসন সমঝোতা সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হবার কথা।
মঙ্গলবার বৈঠকে ঢোকার আগে আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব বলেন আমাদের গণতন্ত্র এবং দেশকে বাঁচাতে হবে। দেশের জন্যই এটা জরুরি।
সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষই বিজেপিকে চায় না। বিজেপিকে হঠাতে, মোদিকে হঠাতে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। আপাতত বৈঠক শেষের পর ঘোষণার দিকেই তাকিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহল।