
ওঙ্কার ডেস্ক : আন্না বিশ্ববিদ্যালয় ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত ৩৭ বছরের জ্ঞানশেখরনকে সোমবার চেন্নাই আদালত সাজা শোনালো। ধর্ষণ সহ ১১টি অভিযোগের সবকটিতেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করার চার দিন পর মহিলা আদালতের বিচারক এম রাজলক্ষ্মী রায় দিয়েছেন,, তাকে কমপক্ষে ৩০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।কারাদণ্ডের পাশাপাশি জ্ঞানশেখরনকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করে বিশেষ আদালত।
২৪ ডিসেম্বর, কোট্টুরপুরম অল উইমেন থানায় নিগৃহীতা একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয় যে, ২৩ ডিসেম্বর রাতে জ্ঞানশেখরন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তার এক পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে থাকাকালীন প্রথমে তার পুরুষ বন্ধুর উপর হামলা চালায়, পরে তাকে ধর্ষণ করে। সেই ঘটনা আবার জ্ঞানশেখরন তার মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে। এরপর মহিলা অফিসারদের নিয়ে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। সেই মতো পুলিশের একটি বিশেষ দল এই যৌন নির্যাতনের মামলার তদন্ত শুরু করে।

জ্ঞানশেখরের বিরুদ্ধে আইনের ১১টি ধারার অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ধারা ৩৩১(৬)রাতে লুকিয়ে অনুপ্রবেশ, ১২৬(২)যেকোনো ব্যক্তিকে ভুলভাবে আটকে রাখা , ১৪০(৪) কোনও ব্যক্তিকে গুরুতর আঘাত করার জন্য অপহরণ, ৭৫(২) যৌন হয়রানি, ৬৪(১) ধর্ষণ। এই তদন্তে উঠে এসেছে ২০১১ সালে একই ক্যাম্পাসে আরও একটি ধর্ষণের ঘটনা।
এই মামলা তামিলনাড়ুর অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যর্থতা সামনে আনে। অকেজো সিসিটিভি ক্যামেরা, অপর্যাপ্ত মহিলা নিরাপত্তা রক্ষী এবং ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ উদ্বেগের মূল বিষয় হয়ে ওঠে।
রাজ্যে বিজেপির ভাইস প্রেসিডেন্ট কে. আন্নামালাইয় নারী সুরক্ষা নিয়ে ডিএমকে –র প্রশাসনিক ব্যররথতার অভিযোগ আনেন। প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুর বিরোধী দলগুলি এর আগে অভিযোগ তুলেছিল, জ্ঞানশেখরনের সঙ্গে শাসকদল ডিএমকে-র বিশেষত উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ এনেছেন যে জ্ঞানশেখরন ঘটনার ছবি ও ভিডিও ডিএমকে-র শীর্ষ নেতাদের কাছে শেয়ারও করেছে। আন্নামালাই মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের ছেলে উদয়নিধি স্ট্যালিনের সাথে অভিযুক্তর একটি ছবিও শেয়ার করেছিলেন, দাবি করেছিলেন যে জ্ঞানশেখরন একজন ডিএমকে-র সদস্য ছিলেন।
যদিও ডিএমকে এই দাবিগুলি অস্বীকার করেছে এবং অভিযোগগুলিকে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছে। এই ঘটনাটি ডিএমকে-র রাজনৈতিক দুর্দশাকেই সামনে এনেছে বলে বিরোধীরা সরব হয়েছে। আঙুল তুলেছে ডিএমকের যুব শাখা এবং শাসন ব্যবস্থার দিকে।
মামলাটি সারা দেশে চর্চার বিষয় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এআইএডিএমকে এবং অভিনেতা বিজয়ের দল টিভিকে সহ অন্যান্য রাজনৈতিকগুলি সোচ্চার হয়,যা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে শাসকদলের কাছে বড়সড় কাঁটা হয়ে উঠল।