
ইন্দ্রানী চক্রবর্তী:শনিবার সকালেই জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন মঞ্চে উপস্থিত হন মুখ্য সচিব স্বরাষ্ট্র সচিব এবং ডিসি সেন্ট্রাল। সেখানে মুখ্য সচিবের ফোন থেকেই অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন তুলে নেওয়ার আগে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী বলেন তিনি? মুখ্যমন্ত্রী ফোনালাপের সময় জানান, “আদালতে মামলা চলছে। বিচার মিলবে। আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করব। হাসপাতালের উন্নয়নে ১১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সরকারি হাসপাতাল পরিষেবা না দিলে মানুষ কোথায় যাবে? দিদি হিসেবে বলছি, আপনাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হবে। আপনারা অনশন তুলে দয়া করে কাজে যোগ দিন।”
তিনি আরও বলেন, “আমি চাই পরের বার থেকে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে একসঙ্গে নির্বাচন হোক। কালীপুজো, দীপাবলি, উপনির্বাচন আছে। আমি কথা দিচ্ছি, ৩-৪ মাস সময় দাও। তোমাদের সমস্যাগুলো নিশ্চয়ই দেখে নেব। তোমাদেরও পরীক্ষা আছে। পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। আন্দোলন থেকে সরে এসো। আদালতে মামলা চলছে। সুবিচার মিলবে।”
মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য নিয়ে গণসংকারী জুনিয়র ডাক্তার স্নিগ্ধা হাজরা মন্তব্য করেছেন, “যে দিন অনশনে বসেছি, সে দিনও ডিউটি করে এসেছি। আর আমরা মাত্র আট জন এখানে অনশনে বসার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে? এটা উনি কী ভাবে বললেন? উনি দাবি মেনে নিন, তা হলে এখনই কাজে ফিরব আমরা।” এদিকে সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা বললেন, “আমাদের মনে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের দশ দফা দাবি স্পষ্ট ভাবে জানেনই না।” শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে ফোনালাপের পর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে জুনিয়র ডাক্তাররা জানান, “আমরা সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে যাব। উনি আমাদের দাবি মেনে নিন, আমরাও কাজে ফিরতে চাই। নির্দেশিকা বের করার জন্য গত ১৪ দিন ধরে বসে আছি।”
প্রসঙ্গতঃ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার নবান্নে বিকাল ৫টায় বৈঠকে ডেকেছেন জুনিয়র ডাক্তারদের। তাঁরা যাবেন বলে নিশ্চয়তাও দিয়েছেন। কিন্তু সোমবার বৈঠক ডাকা নিয়েও রয়েছে অসন্তোষ। অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার রুমেলিকা কুমার বলেছেন, “আজ শনিবার। আর উনি সোমবার বৈঠক ডেকেছেন। অর্থাৎ, আরও দু’দিন বাধ্য হয়েই চালিয়ে যেতে হবে অনশন। ওঁর কি একবারও মনে হল না এরা আরও দু’দিন না খেয়ে থাকবে?”
সোমবার কি জটিলতা মিটবে? এর মাঝে রাজ্যের শীর্ষ আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রতিটা বৈঠকই শেষ হয়েছে অসন্তোষ নিয়ে। এবার কি সন্তুষ্টি আসবে? জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়েছেন যদি দাবি না মানা হয় তবে আন্দোলন একই তীব্রতায় চলবে।