
প্রদীপ মাইতি, দিঘা : দিঘা যেন নতুন করে সাজছে। সমুদ্রের গর্জন, বালির মায়া, সবকিছুর মাঝেই এবার পর্যটকদের জন্য যোগ হচ্ছে এক নতুন মাত্রা। দিঘা মেরিন ড্রাইভের পাশে গড়ে উঠছে এক অপূর্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আবাস, ৩০০ বছরের প্রাচীন মা নায়কালী মন্দির।

আগামী ২৮ এপ্রিল দিঘায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করবেন তিনি। তার আগেই দৃষ্টি কাড়ছে শংকরপুরের আগে মেরিন ড্রাইভের ধারে গড়ে ওঠা এই ঐতিহাসিক ও সংস্কৃতি মণ্ডিত মন্দির।

সন্ধ্যা নামলেই এই অঞ্চল যেন রূপ নেয় এক স্বপ্নময় জগতে। রঙিন আলোর রোশনাই, সঙ্গে থ্রিডি প্রজেকশন ম্যাপিং, জলকেলির ফোয়ারা, আর মন্দির থেকে ভেসে আসা ঘন্টার ধ্বনি—সব মিলিয়ে এক অতুলনীয় অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে পর্যটকদের জন্য।

প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী, প্রায় ৩০০ বছর আগে গভীর জঙ্গলের মধ্যে একটি তেঁতুলগাছের কোঠর থেকে মায়ের আবির্ভাব ঘটে। সেই সময় সূর্যের আলো প্রবেশ করত না এমন ঘন অরণ্যে, যেখানে বাঘ-ভল্লুকের ছিল অবাধ বিচরণ। সেখানেই কিছু সেবাইত প্রথম মায়ের দর্শন পান। একচালা ঘরে শুরু হয় পুজো, যা আজ এক বিশাল পূজোৎসবে পরিণত হয়েছে। প্রাচীন কাহিনী ও লোকবিশ্বাসে জাগ্রত এই দেবীকে কেন্দ্র করে আজ হাজারো মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। কালীপুজোর আগেই চলছে প্রস্তুতি, স্থানীয় মানুষ থেকে প্রশাসন, সবার নজর এই মন্দির ও সংলগ্ন অঞ্চলকে ঘিরে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলি কেবল ধর্মের অভিজ্ঞতাই দেয় না, বরং এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও বড় ভূমিকা নেয়। মা নায়কালী মন্দির ঘিরে দিঘার অর্থনীতিতে যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে, তা এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। শুধু সমুদ্র নয়, এবার দিঘার পরিচয় হবে ধর্ম-সংস্কৃতি-আলোকসজ্জার মেলবন্ধনের নতুন রূপে। আর সেই কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন মা নায়কালী—লোকবিশ্বাসে জাগ্রত, আলো-শব্দে প্রাণবন্ত।