
সুরজিৎ দাস, নদীয়া : পশ্চিমবঙ্গের তৃনমূল জমানায় যেন শুধুই দুর্নীতি। নদীয়ার বগুলা দুই নম্বর ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতে আর্থিক দুর্নীতি ও ৪৮৮৮টি জাল সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন চার কর্মী।
এর আগেও বারংবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ধৃতদের বিরুদ্ধে। এবার জাল সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগ ছাড়াও রয়েছে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা তছরুপের অভিযোগ। হাঁসখালি থানার পুলিশ দুর্নীতি ও জাল সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগে মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছে। তারমধ্যে রয়েছে বগুলা দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সেক্রেটারি প্রকাশ রায় সহ আরও তিনজন। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
ঘটনাটি নিয়ে বগুলা দুই নাম্বার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুস্মিতা বিশ্বাস বর্মন জানান, “পুলিশ পুলিশের মত কাজ করবে এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই”।
রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক অসীম বিশ্বাস বলেন, “২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বগুলা দুই নাম্বার গ্রাম পঞ্চায়েত ছিল তৃণমূলের দখলে। সেই সময়ও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে”।
ঘটনাটি সম্পর্কে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিল্পী বিশ্বাস বলেন, “মোট ৪৮৮৮টি ভুয়ো জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়েছে যেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয় । যেখানে পঞ্চায়েতের একটা গ্রামে বছরে তিন থেকে চারটে শিশু জন্মায় সেক্ষেত্রে এই বিপুল শিশু জন্মের যে সার্টিফিকেট তৈরি হয়েছে তা সম্পূর্ণ জাল । সরকারি নথিতে ছাড়া ব্লক জুড়েও এত শিশু জন্মায়নি”। তাছাড়াও তিনি জানান, “আমরা আশাকর্মী হেলথ সেন্টার এমনকি বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নথিতে এক তৃতীয়াংশ শিশুর জন্মের নথি পাইনি । ইতিমধ্যেই জাল নথি করার অভিযোগে এই পঞ্চায়েতের চারজন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আমি চাই পুলিশ প্রশাসন কড়া হাতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক”।
ঘটনার তীব্র কটাক্ষ করে হাঁসখালির বগুলা দু’নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “সম্পূর্ণ দু’নম্বরই করে জাল জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়েছে । শুধু চারজনকে গ্রেফতার করলে হবে না এর সাথে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকেও গ্রেফতার করতে হবে। কারণ তিনি তার অফিসের জাল জন্ম সার্টিফিকেটের ব্যাপারটা এড়িয়ে যেতে পারেন না”। পাশাপাশি তিনি বলেন, “এর পিছনে যদি কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি যে দলের লোকই থাক না কেন তাদেরকেও গ্রেফতার করতে হবে”।