
স্পোর্টস ডেস্ক :
ডুরান্ড কাপে পরপর দুটি ম্যাচ টাই ব্রেকারে জেতানোর পর ফাইনাল নিয়েও যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের তারকা গোলকিপার বিশাল কয়েথ। কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালের মতো শনিবার ফাইনালও যদি পেনাল্টি শুট আউট বা টাই ব্রেকারে গড়ায়, তা হলেও তিনি দলকে জেতাতে পারেন বলে জানিয়েছেন পাঞ্জাবের এই গোলকিপার।
চলতি ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে কার্যত একা হাতে জেতান তাদের গোলপ্রহরী বিশাল। মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সেমিফাইনালে পেনাল্টি শুট আউট বা টাইব্রেকারে ২০২২-এর চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে পেনাল্টি শুট আউটের শেষ দু’টি শট বাঁচিয়ে দলকে ফাইনালে তোলেন তিনি। তার আগে কোয়ার্টার ফাইনালে ধনচন্দ্র মিতেই-এর শট আটকে দলের জয় নিশ্চিত করে ফেলেন বিশাল। এটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় সেভ।
শনিবার ফাইনালে তারা ঘরের মাঠে মুখোমুখি হবে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের, যারা এই প্রথম ডুরান্ড কাপের ফাইনাল খেলতে চলেছে। পরপর দুই ম্যাচে দলকে জিতিয়ে আত্মবিশ্বাসী বিশাল বলেন, “পেনাল্টি বাঁচানো ও দলকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব। আত্মবিশ্বাস ছিল। কারণ, আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে পেনাল্টিতে জিতেছিলাম। তার আগেও কয়েকবার পেনাল্টিতে জিতেছি। তাই আমার সতীর্থদের উপর বিশ্বাস ছিল যে তারা গোল করবে। আর আমি যদি দু-একটা শট বাঁচাতে পারি, তা হলে আমরাই জিতব”।
ফাইনাল টাই ব্রেকারে গড়ালে তার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান বিশাল। বলেন, “আমরা পেনাল্টিতে কোনো ম্যাচ হারিনি। আশা করি, আমি এটা বজায় রাখতে পারব এবং আমার দলকে আত্মবিশ্বাস জোগাতে পারব। যখন ম্যাচ টাইব্রেকারে যায় এবং আমি ক্রসবারের নীচে থাকি, আমার ওপর সতীর্থদের আস্থা থাকে এবং তারা চাপমুক্ত হয়ে শট নিতে পারে। এটাই আমাদের সুবিধা”।
পারফরম্যান্সে এই উন্নতির জন্য দলের নতুন স্প্যাানিশ কোচ হোসে মোলিনাকে ধন্যবাদ জানান বিশাল। বলেন, “তিনি (মোলিনা) একজন গোলকিপার হওয়ায় খুব ভালভাবে জানেন, কীভাবে একজন গোলকিপারকে প্রশিক্ষণ দিতে হয়। এটা আমাদের জন্য খুবই কার্যকরী। কারণ, আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি এবং উন্নতি করতে পারি। আমাদের কোচেরা পেনাল্টি কিকের কৌশল সম্পর্কে তথ্য দেন। তাই আমাদের কাছে তথ্য থাকে, এবং এটি সত্যিই আমাদের সাহায্য করে। দলের খেলোয়াড়রা পেনাল্টি মিস করলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে ঠিকই। কিন্তু এটা মাঠের ভিতরের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে”।
সবুজ মেরুন শিবিরের অস্ট্রেলীয় তারকা দিমিত্রিয়স পেট্রাটোসের মুখেও বিশালের প্রশংসা। তিনি বলেন, “বিশালই আমাদের সাফল্যের নায়ক। গত ম্যাচে দুটি পেনাল্টি বাঁচিয়েছে। আমরা তার উপর আস্থা রাখি। চ্যাম্পিয়নের খেতাব থেকে আর মাত্র একটি ম্যাচ দূরে আমরা”।
গত দুই ম্যাচেই অনেক গোল খেয়েছে তারা। গত ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে থাকার পরও জয় পায় মোহনবাগান এসজি। এই সম্পর্কে দলের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করার মানসিকতার প্রশংসা করে দিমি বলেন, “আমরা কখনও হাল ছাড়ি না। এটাই একমাত্র ব্যাপার, যা আমাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। এই ব্যাপারটা পরবর্তী ম্যাচ এবং আসন্ন মরশুমেও বজায় রাখতে চাই। আমি খুব খুশি এবং দলের ছেলেদের নিয়ে গর্বিত।”
দলের অধিনায়ক শুভাশিস বোস, সেমিফাইনালে যিনি চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান এবং ফাইনালে অনিশ্চিত. তিনি দলের ফুটবলারদের চারিত্রিক দৃঢ়তার প্রশংসা করে বলেন, “ছেলেরা দুর্দান্ত চারিত্রিক দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছে। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে, লড়াই করে ফিরে আসতে পারি আমরা। দীপেন্দু (বিস্বাস) বেঞ্চ থেকে নেমে অসাধারণ খেলেছে। প্রতিটি খেলোয়াড়ই ভালো খেলেছে, এবং আমরা একটা দল হিসেবে জিতেছি। আমি এই দল নিয়ে গর্বিত”।
শনিবার ডুরান্ড কাপ ফাইনালে যে তাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র ট্রফি জেতা, তা সাফ জানিয়ে দিয়ে শুভাশিস বলেন, “ট্রফি ছাড়া মোহনবাগান এসজি-র কোনও মূল্য নেই। এই ক্লাব বছরের পর বছর অসংখ্য ট্রফি জিতেছে। আমরা ট্রফি জিততেই মাঠে নামি এবং আমরা আমাদের সমর্থকদের ইচ্ছা পূরণের চেষ্টা করব। আমাদের লক্ষ্য ফের ডুরান্ড কাপ জেতা।”