
স্পোর্টস ডেস্ক :লিগের শুরুতেই পরপর দুই ম্যাচে হার মোটেই আশা করেননি তিনি। তবে এই ফল কার্লস কুয়াদ্রাতকে যে বিস্মিত করেছে, তাও না। বরং ইস্টবেঙ্গল এফসি-র কোচ বলছেন, দলের বোঝাপড়া এখনও নিখুঁত হয়ে ওঠেনি। ফলে এমন হচ্ছে। কুয়াদ্রাতের বিশ্বাস, লিগ যত এগোবে, তত দলের ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়া আরও ভাল হবে এবং দল ততই উন্নতি করবে।
রবিবার কোচির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে ৬০ মিনিটের মাথায় গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পর ২৫ মিনিটের ব্যবধানে দু’গোল খেয়ে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে হেরে মাঠ ছাড়তে হয় লাল-হলুদ বাহিনীকে। প্রথম ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধেও শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হারতে হয় তাদের। কেন এমন হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দিয়ে কুয়াদ্রাত বলেন, “এ বারের আইএসএলে প্রায় রোজই এরকম হচ্ছে। বেশির ভাগ ম্যাচেই ৮৫ মিনিটের পরে ফয়সালা হয়েছে। আজ সেটা আমাদের ক্ষেত্রেও হল এবং আমাদের বিরুদ্ধেও গেল। দ্বিতীয় গোল করার সুযোগটাই তৈরি করতে পারিনি আমরা। এই ম্যাচে আমরা বুঝে নিলাম, কোন জায়গায় আমাদের ভুল হচ্ছে। এ বার আমাদের এই ভুলগুলো শোধরাতে হবে। আরও খাটতে হবে”।
লাল-হলুদ কোচের মতে, এই ম্যাচে যে ভাল ফুটবল খেলেছে তাঁর দল, তা সারা ম্যাচে ধরে রাখতে পারলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যেত। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা যে তা পারেননি, তা মেনে নিয়ে কুয়াদ্রাত বলেন, “এখনও আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হবে। ফুটবলে মুহূর্তের মধ্যে খেলা ঘুরে যেতে পারে। আমাদের ক্ষেত্রে আজ সেটাই হয়েছে। যে সুবিধা আমরা অর্জন করেছিলাম এই ম্যাচে, তা ধরে রাখতে পারিনি। আমরা যে আজ কোনও সময়ই ভাল ফুটবল খেলিনি, তা নয়। কিন্তু তা ধরে রাখা প্রয়োজন ছিল। আমাদের এই ভাল ফুটবলটা ধরে রাখতে হবে। সারা মরশুমেই এই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে হবে। দলটা তৈরির পর্যায়ে আছে। আনোয়ার আলি আজই প্রথম খেলল। হেক্টর ইউস্তের এটা দ্বিতীয় ম্যাচ। ওদের সময় দিতে হবে”।
দলের নতুন ফুটবলারদের মধ্যে যে এখনও বোঝাপড়া পুরোপুরি ভাবে গড়ে ওঠেনি, তাও স্বীকার করে নেন ইস্টবেঙ্গলের কোচ। বলেন, “আজ আমরা ছ’জন নতুন ফুটবলারকে প্রথম দলে রেখেছিলাম। মরশুমের শুরুতে তাদের মধ্যে যে বোঝাপড়ার সমস্যা হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি। সময় লাগবে। সেই সময়টা দিতে হবে। তবে এই নিয়ে হা-হুতাশ করার কিছু নেই। প্রথম দুই ম্যাচে আমরা পয়েন্টের খুব কাছাকাছি গিয়েও ফিরে এসেছি। কেরালা ব্লাস্টার্স সমতা আনার আগে পর্যন্ত আমাদের ছেলেরা আজ খারাপ খেলেনি। কিন্তু ওরা গোল করার পরে যে চাপটা বাড়ায়, তা সামলাতে পারেনি আমাদের ফুটবলাররা। প্রতিপক্ষ হিসেবে আমাদের আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে হবে। আমাদের ছেলেদের সেই গুন ও মানসিকতা দুটোই আছে। মরশুম যত এগোবে, ওরা তত উন্নতি করবে বলেই আমার বিশ্বাস”।
গোলের প্রচুর সুযোগ পেয়েও তা বারবার হাতছাড়া হওয়া প্রসঙ্গে কুয়াদ্রাত বলেন, “গোলের সামনে গিয়ে খেই হারিয়ে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে অনেক কাজ করেছি আমরা। এই সমস্যা আমাদের গত ম্যাাচেও হয়েছে। আসলে এই সমস্যা মেটাতে গেলে ফুটবলারদের সঠিক মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেটা আমাদের ছেলেরা সব সময় পারছে না। এই ব্যাপারটা ওদের আরও ভাল বাবে বোঝাতে হবে। আসলে তরুণ ফুটবলাররা গোলের সামনে গিয়ে এতটা উত্তেজিত হয়ে পড়ে যে মাঝে মাঝে ফুটবলের বেসিক মনে থাকে না তাদের। এটা আমি ভারতে কোচ হিসেবে এসে দীর্ঘ সময়ে লক্ষ্য করেছি। তবে এটা আমারই কাজ। ওদের আরও বোঝাতে ও শেখাতে হবে”।