
স্পোর্টস ডেস্ক : এবারের মতো আইএসএলে তাদের চ্যালেঞ্জ শেষ। তাই এখন ইস্টবেঙ্গল এফসি-র ফোকাস পুরোপুরি রয়েছে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল পর্বের দিকে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ তুর্কমেনিস্তানের চ্যাম্পিয়ন দল এফকে আর্কাদাগ। আইএসএলের শেষ চারটি ম্যাচে ভাল ফুটবল খেলায় আত্মবিশ্বাসী লাল-হলুদ বাহিনী। কিন্তু আর্কাদাগের মতো অপ্রতিরোধ্য দলকে আটকানো বা হারানো তাদের পক্ষে মোটেই সোজা হবে না।
আইএসএলে টানা তিনটি ম্যাচ জিতে প্লে-অফের দৌড়ে নিজেদের ভাসিয়ে রেখেছিল কলকাতার দল। কিন্তু গত ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি-র সঙ্গে ড্র এই দৌড় থেকে ছিটকে দেয় তাদের। তাও ৯০ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে ছিল তারা। কিন্তু সংযুক্ত সময়ে বেঙ্গালুরু পেনাল্টি পেয়ে যাওয়ায় তা থেকে গোল শোধ করে ম্যাচ ড্র রাখতে পারে তারা। কিন্তু দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দেখে খুশি তাদের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোন বলছেন, এএফসি-র চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি তাঁর দল।
গত বছর জানুয়ারিতে সুপার কাপের ফাইনালে ওডিশা এফসি-কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ফলে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর প্রাথমিক পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে লাল-হলুদ বাহিনী। কিন্তু সেখানে তারা তুর্কমেনিস্তানের আলটিন আসিরের কাছে হেরে যায়। ফলে তারা এএফসি-র পরবর্তী স্তরের প্রতিযোগিতা চ্যালেঞ্জ লিগের গ্রুপ পর্বে খেলার সুযোগ পায়। সেখানে তারা প্রথমে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসকে ৪-০-য় হারায়, ভুটানের পারো এফসি-র সঙ্গে ২-২ ড্র করে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে লেবাননের নেজমে এফসি-র বিরুদ্ধে ৩-২-এ জিতে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্বে মুখোমুখি হবে তুর্কমেনিস্তানের এফকে আর্কাদাগের বিরুদ্ধে। এফসি আর্কাদাগের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে নামার আগে যতটা সমীহ করছেন প্রতিপক্ষকে ততটাই আত্মবিশ্বাসের সুর নিজের দল নিয়েও। আর হবে নাই বা কেন, আইএসএল ২০২৪-২৫-এর শেষের দিকে এসে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইস্টবেঙ্গল তাতে কোচ বলতেই পারেন, “ওরা খুব শক্তিশালী দল, তবে আমরাও পিছিয়ে নেই।” একটা ১০০ বছরের ক্লাব খেলতে নামবে মাত্র দুই বছরের ক্লাবের বিরুদ্ধে, সেখানে দাঁড়িয়ে ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিচ্ছেন অস্কার ব্রুজোঁ।
প্রতিপক্ষ দলের কোচ অবশ্য ইস্টবেঙ্গলের টানা লিগ খেলে নিজেদের তৈরি রাখাকে এগিয়ে রাখছেন। তাঁর মতে, “ইস্টবেঙ্গল দলের মরসুম অনেকদিন আগেই শুরু হয়েছে, আমরা সবে লিগ শুরু করেছি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ওরা খেলার মধ্যে রয়েছে। সেটা ওদের অ্যডভান্টেজ।” তবে অস্কার ব্রুজোঁ এটা মানতে নারাজ। বরং তিনি বলছেন, “এটা যেমন সুবিধে তেমন সমস্যাও। দলে ক্লান্তি, চোট-আঘাত তৈরি হয়ে যায়।” সঙ্গে অবশ্য কোনও কিছু নিয়েই অজুহাত দিতে নারাজ তিনি। তা আইএসএল-এর রেফারিং হোক কিংবা দলের চোট থেকে কার্ড সমস্যা যাই হোক না কেন এগুলোকে মাথায় চাপতে দিতে চান না তিনি। আসল কথা মাঠে নেমে নিজেদের সেরাটা দেওয়ই এই মুহূর্তে সব থেকে বড় লক্ষ্য।
দেশের প্রতিনিধিত্ব করাটা এখন সব থেকে বড় মোটিভেশন ইস্টবেঙ্গলের কাছে। অস্কার ব্রুজোঁর কথায় বার বার সেটাই ঘুরে ফিরে এল। তিনি বলছিলেন, আমাদের উপর চাপ আছে। পাশাপাশি এটা আমাদের জন্য গর্বের মুহূর্তও। কারণ আমরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। দল ভাল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের ছেলেরা যেভাবে খেলছে তাতে এই ম্যাচে ভাল ফুটবল দেখা যাবে।”