
স্পোর্টস ডেস্ক :কার্ড সমস্যার জন্য বুধবার কোচির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচে সাইডলাইনে থাকতে পারবেন না ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত। তাই তাঁর জায়গায় দল পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে সহকারী কোচ বিনো জর্জের কাঁধে, যিনি কেরালারই মানুষ। অর্থাৎ, নিজের রাজ্যের দলকে হারানোর লক্ষ্য নিয়েই নামবেন জর্জ। সে জন্য বোধহয় একটু বেশিই উত্তেজিত তিনি। ব্লাস্টার্সের ঘরের মাঠে তাদের বিরুদ্ধে দল নামানোর আগে সাংবাদিক বৈঠকে সে কথা আর চেপে রাখতে পারলেন না তিনি।
বুধবারের ম্যাচে যে জিততে মরিয়া তাঁর দল, তা স্পষ্ট জানিয়ে কুয়াদ্রাতের সহকারী মঙ্গলবার বলেন, “কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে দল নামাতে পেরে আমি খুশি। তিন পয়েন্ট পাওয়ার ব্যাপারে আমি প্রত্যয়ী। আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ীই খেলব। আমাদের ছেলেরা তিন পয়েন্ট পাওয়ার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। ওরা (ব্লাস্টার্স) ওদের শেষ তিন ম্যাচে কী রকম খেলেছে, তা আমরা দেখেছি। আমরা ওদের হারানোর মতো একটা পরিকল্পনা নিয়েই এসেছি। কাল আমরা জেতার জন্যই ঝাঁপাব”।
তাঁর কথাবার্তা শুনে জর্জকে আত্মবিশ্বাসী মনে হলেও বুধবার কোচির অশান্ত ব্লাস্টার্স সমর্থকদের সামনে তাঁর দলের ছেলেরা কতটা কী করতে পারবেন, এই নিয়ে প্রশ্ন আছেই। বলেন, “এই ধরনের মুখরা সমর্থকদের সামনে খেলতে সব দলেরই ভাল লাগে। আইএসএলে শুধু মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলই এত বিশাল সংখ্যক সমর্থকের সামনে খেলে। আমাদের ছেলেদের প্রচুর সমর্থকের সামনে খেলার অভ্যাস আছে। আশা করি, আমাদের এখানে খেলতে অসুবিধা হবে না”।
দলের প্রধান ভারতীয় স্কোরার নন্দকুমার শেকরের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাই তিনি আর চলতি আইএসএলে খেলতে পারবেন না। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সল ক্রেসপোরও চোট রয়েছে। তাই দল পূর্ণ শক্তি নিয়ে যে মাঠে নামতে পারবে না বুধবার, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বরং রিজার্ভ দল থেকে যে দু’জন ফুটবলারকে পরের ম্যাচগুলির জন্য সিনিয়র দলে নথীভুক্ত করা হয়েছে, সে জন্য খুশি জর্জ। কারণ, জুনিয়র ফুটবলাররা তাঁর প্রশিক্ষণেই তৈরি হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শ্যামল বেসরা আর মহীতোষ রায়ের জন্য আমি খুব খুশি। শুধু ওরা দু’জন নয়, আমন সিকে, জেসিন টিকে, পিভি বিষ্ণুর মতো আরও কয়েকজনকে রিজার্ভ দল থেকে সিনিয়র দলে নেওয়া হয়েছে। কেরালা ব্লাস্টার্সও তাই করেছে। এরা যে আইএসএলে ভাল ভাল দলের বিরুদ্ধে খেলতে পারছে, সে জন্য আমি খুশি। সিনিয়র দলে সুযোগ পাওয়াটাই এখন জুনিয়রদের কাছে বড় মোটিভেশন। আমারও সে জন্য রিজার্ভ খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করতে ভাল লাগে। ওরা সিনিয়র দলে এলে আমার আরও ভাল লাগে। আমাদের হেড কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত যে তরুণ ফুটবলারদের ওপর আস্থা রাখছেন ও তাদের আরও বড় মঞ্চে খেলার সুযোগ দিচ্ছেন, সে জন্য আমি খুশি”।
দলের চোট পাওয়া খেলোয়াড়দের সম্পর্কে জর্জ বলেন, “সল আমাদের সঙ্গে এসেছে। নুঙ্গাও ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছে। নন্দকুমারেরও চিকিৎসা চলছে। দেখা যাক কী হয়”।
অন্য দিকে, দলের ক্রমবর্ধমান ভুলভ্রান্তি নিয়ে চিন্তিত ব্লাস্টার্স কোচ ইভান ভুকোমানোভিচ বলেন, “জামশেদপুরে আমরা গোলের অনেক সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু শেষ দিকে আমরা এমন কিছু ভুল করেছিলাম, যার ফলে ম্যাচটা আমরা হেরেও যেতে পারতাম। আমাদের এ সব ভুল করলে আর চলবে না। খেলায় নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে, পুরো পয়েন্ট তুলতে হবে”।
এই ম্যাচে তিনি পুরো দল নিয়ে নামতে পারবেন কি না, সেই ব্যাপারে অনিশ্চিত। বলেন, “ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে কাল আমরা চার-পাঁচজনকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাতে পারি। কারণ, ম্যাচের পর ঘণ্টা দুয়েক পরেই আমাদের গুয়াহাটির বিমান ধরতে হবে। কারণ, একজন কোচ সব ম্যাচেই মাঠে তরতাজা পা চায়। যারা ভাল ফল করে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারে”। ব্লাস্টার্সের পরের ম্যাচ শনিবার, নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র বিরুদ্ধে। তার আগে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে চান ভুকোমানোভিচ।