
ওঙ্কার ডেস্ক: চড়কের মেলা দেখে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিল বছর চোদ্দোর এক কিশোরী। অভিযোগ, পথে তাকে আটকায় দুই যুবক। ফোন কেড়ে নেয় তারা। এক ক্লাবের সামনে বসিয়ে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। সোমবার সন্ধ্যায় চুঁচুড়ায় ঘটেছে এই ঘটনা।
স্থানীয় কয়েক জন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ মেয়েটিকে একা দেখে সন্দেহ হলে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরে মেয়েটির বাবা-মা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান চুঁচুড়া থানায়। সেখানেই তৈরি হয় নতুন বিতর্ক।
অভিযোগ, থানায় পৌঁছনোর পরে মেয়েটির বাবাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মা-মেয়েকে থানার শিশুবান্ধব কক্ষে সারা রাত বসিয়ে রাখা হয়। তাঁদের বাড়ি ফিরতে দেওয়া হয়নি। মেয়েটির মায়ের অভিযোগ, “আমাদের বসিয়ে রেখে বার বার নানা প্রশ্ন করা হচ্ছিল। কেন বাড়ি যেতে দেওয়া হচ্ছে না, সেই বিষয়ে পুলিশ কিছু বলছিল না।” যদিও খাবার ও জল দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে পরিবার।
পরদিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ মা-মেয়েকে পাঠানো হয় চুঁচুড়া মহিলা থানায়। অভিযোগ, সেখানেও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তাঁদের একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। পরে স্থানীয় কয়েক জনের সহায়তায় তাঁরা হুগলি জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিটের সঙ্গে দেখা করেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে চুঁচুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মেয়েটির বাবা। তবে পুলিশের বিরুদ্ধেও হেনস্থার অভিযোগ থাকলেও, তা লিখিতভাবে জানাতে রাজি হননি তিনি। তাঁর যুক্তি, “পুলিশের বিরুদ্ধেই যদি অভিযোগ করি, তাহলে ঝামেলা বাড়তে পারে।”
ঘটনার পর জেলা শিশুসুরক্ষা আধিকারিক সুতপা চক্রবর্তীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি বা মেসেজের জবাব দেননি।
ঘটনার বিষয়ে চুঁচুড়া থানা এবং মহিলা থানার কর্তাদের প্রশ্ন করা হলে তাঁরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা শুধু জানান, “এমনটা হওয়ার কথা নয়, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কর্মী সোমা সরকার। তাঁর প্রশ্ন, “এত গুরুতর অভিযোগ পেয়েও পুলিশ কেন সঙ্গে সঙ্গে তদন্তে নামল না?”
সোমবার সন্ধ্যার ঘটনার পর জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। বিষয়টির নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।