
অপরূপা কাঞ্জিলাল: পিছনে পড়ে রইলেন মুকেশ আম্বানি। তাকে হারিয়ে ভারতের সেরা ধনকুবেরের মুকুট জিতলেন গৌতম আদানি ! কতটা পিছনে পড়লেন মুকেশ আম্বানি? এতো দ্রুত সম্পদ বৃদ্ধির কারণই বা কি? দেখে নিন, সেই সব তথ্য
ফের ভারতীয় ধনকুবেরদের তালিকায় বিরাট বদল। এশিয়া তথা ভারতের ধনীতম ব্যক্তির সিংহাসন থেকে পিছলে পড়লেন শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি। আর তার জায়গা দখল করে নিলেন গৌতম আদানি। হিন্ডেনবার্গ ধাক্কার পরে দীর্ঘ প্রায় ১৭ মাস বাদে ফের একবার ধনীতম ভারতীয়ের মুকুট উঠল গৌতম আদানির মাথায়। ১১১ বিলিয়ন ডলার সম্পত্তি নিয়ে গৌতম আদানি-ই এখন ভারত তথা এশিয়ার সর্বাপেক্ষা ধনী ব্যক্তি। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টাতেই বিপুল পরিমাণে সম্পত্তি বৃদ্ধি করে ধনী তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছেন আদানি। ২৪ ঘণ্টায় তার সম্পত্তি ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ২৪ ঘণ্টায় মুকেশ আম্বানির সম্পত্তি মাত্র ৭৬.২ মিলিয়ন বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই বিপুল পরিমাণে সম্পত্তি বৃদ্ধির জেরেই এবার ধনীতম ব্যক্তির আসন পাকা করেছেন আদানি।
উল্লেখ্য, বিশ্বের সকল ধনকুবেরদের তালিকা অনুযায়ী ব্লুমবার্গের ডেটা জানাচ্ছে, ১১১ বিলিয়ন ডলার সম্পত্তি নিয়ে তালিকার ১১ নম্বর স্থানে অবস্থান করছেন গৌতম আদানি। যা কিনা এশিয়া ও ভারতের মধ্যে প্রথম। অন্যদিকে, মুকেশ আম্বানি এই তালিকার ১২ নম্বর স্থানে রয়েছেন, তার সম্পত্তির পরিমাণ ১০৯ বিলিয়ন ডলার। তিনি বর্তমানে ভারত তথা এশিয়ার দ্বিতীয় ধনীতম ব্যক্তি। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুযায়ী, বার্নার্ড আর্নল্ট বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, তার সম্পদের পরিমাণ ২০৭ বিলিয়ন ডলার। এদিকে, ২০৩ বিলিয়ন ডলার সম্পদের ওপর ভর করে এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ইলন মাস্ক। পাশাপাশি, জেফ বেজোস তৃতীয় এবং মার্ক জুকারবার্গ চতুর্থ স্থানে রয়েছেন। এরপর পঞ্চম থেকে দশম স্থানে রয়েছেন ল্যারি পেজ, বিল গেটস, সের্গেই ব্রিন, স্টিভ ভলমার, ওয়ারেন বাফেট ও ল্যারি এলিসন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশ পাওয়া হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের ধামাকায় বিধ্বস্ত হয়েছিল আদানি সাম্রাজ্য। বিশ্ব ধনী তালিকার চতুর্থ স্থান থেকে সরাসরি ৩০ নম্বরে ছিটকে গিয়েছিলেন এই ধনকুবের। তারপর থেকে দেড় বছর অতিক্রান্ত হলেও প্রথম ১০ জনের মধ্যে আর হাজির হতে পারেনি আদানি। তবে, বর্তমানে তিনি রয়েছেন ১১ তম ধনকুবের হিসেবে। যদিও বড় ধাক্কা কাটিয়ে এক বছরের মধ্যেই ফের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন গৌতম আদানি।
তবে আজকের ধনকুবের গৌতম আদানি কিনতু চিরকাল এমন সম্পদের সিংহাসনে বসে ছিলেন না। পিছনে ফিরে তাকালে জানা যায় ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের ব্যবসায়ী গৌতম আদানি স্কুলে লেখাপড়া শেষ করেন নি ।এর পর তিনি তার পিতার গার্মেন্টস ব্যবসায় যোগ না দিয়ে, হীরার ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন।আরো পরে তিনি তার ভাইয়ের প্লাস্টিক কারখানা পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন।
১৯৮৮ সালে তিনি আদানি এক্সপোর্টস নামের একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন- যা পরে আদানি এন্টারপ্রাইজেসে পরিণত হয়। তার বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে এটিই মুখ্য প্রতিষ্ঠান। আর বর্তমানে তো তার ব্যবসার পরিধি সম্পর্কে আলাদা করে না বললেও চলে।
কিন্তু একদিনেই কিভাবে বাড়ল তার সম্পদ? গৌতম আদানির সম্পদ বৃদ্ধির মূল কারণ, আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলির শেয়ারের তুমুল বৃদ্ধি। আদানি গ্রুপের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির মার্কেট ক্যাপ বেড়েছে ৮৪,১২২ কোটি টাকা। এমতাবস্থায়, গত শুক্রবার এই বিপুল বৃদ্ধির ওপর ভর করেই গ্রুপের সম্মিলিত মার্কেট ক্যাপ পৌঁছে গিয়েছে ১৭.৮৮ লক্ষ কোটি টাকায়।