
অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়: লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত হায়দরাবাদ এফসি-র কাছে হার মেনে নিতে বেশ কষ্ট হচ্ছে মহমেডানের কোচ মেহরাজউদ্দিন ওয়াডুর। গোলের সুযোগ তৈরি করেও গোল করতে না পারার সমস্যার কথাই বারবার বলছেন তিনি। শনিবার চেন্নাইয়ে চলতি আইএসএলে তাদের ১২ নম্বর হারের পর তিনি জানিয়ে দেন শেষ পাঁচটি ম্যাচে তাদের কাছে মর্যাদার লড়াই।
শনিবার সন্ধ্যায় হায়দরাবাদে পয়েন্ট টেবলের শেষ দুই দলের মধ্যে ম্যাচ আকর্ষণীয় হয়ে উঠলেও দু’পক্ষের মধ্যে গোলের সুযোগ নষ্টের প্রতিযোগিতা চলে প্রায় সারাক্ষণই। দুই দলই অনেক সুযোগ পেলেও তার খুব কমই কাজে লাগাতে পারে তারা। অবশেষে মহমেডানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে লিগ ডাবল করে ফেলে হায়দরাবাদ এফসি।
এই হারের পর মেহরাজউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “দ্বিতীয়ার্ধে দল সত্যিই ভাল লড়াই করেছে। একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করেছে, একটা গোলও করেছে। আরও একটা গোল করতে পারত। এই মরশুমে আমাদের বারবার এমন হয়েছে। আমরা গোল করার ক্ষেত্রে খুবই দুর্ভাগ্যবান”।
তিন গোল হজম করা মোটেই পছন্দ নয় মহমেডান কোচের। বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, “তিনটে গোল হজম করা আমাদের পক্ষে চিন্তার বিষয়, আমাদের রক্ষণকে অনেক শোধরাতে হবে। এ ছাড়াও, এ রকম ম্যাচে আমাদের চারিত্রিক দৃঢ়তা আনতে দেখাতে হবে, যা আজ প্রথমার্ধে ছিল না। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ভাল লড়াই করেছি। এই ম্যাচ থেকে অনেক ইতিবাচক দিক পাওয়ার আছে। দেখতে হবে আমরা আজ আর কী কী ভুল করেছি। পারফরম্যান্সের বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে যে, পরবর্তী ম্যাচগুলোতে কোথায় কোথায় উন্নতি করার চেষ্টা করতে হবে আমাদের”।
এ দিন ম্যাচের ৭৭ মিনিটের মাথায় বিকাশ সিংয়ের জায়গায় মকান চোঠেকে নামান মেহরাজউদ্দিন এবং মাঠে নামার দু’মিনিটের মধ্যেই গোল পেয়ে যান তিনি। অ্যালেক্সি গোমেজের কর্নারে দুর্দান্ত ব্যাক ফ্লিকে কঠিনতম কোণ থেকে গোলে বল পাঠিয়ে দেন চোঠে। তরুণ ফরোয়ার্ডকে নামানো প্রসঙ্গে কোচ বলেন, “আমরা চোঠেকে মাঠে নামাই এবং আরও কয়েকটা পরিবর্তন আনি, যা কার্যকরী হয়েছে। আমরা কিছু সুযোগ তৈরি করি এবং প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করি, যা আমাদের সাহায্য করেছে, কিন্তু আমরা গোল করতে পারিনি”।
প্রতিপক্ষের প্রথম গোল নিয়ে মেহরাজ বলেন, “প্রথম গোলে হায়দরাবাদের একজন খেলোয়াড়ের থেকে ভাল একটা বল এসেছিল এবং সেই বলের ওপর ভাল নিয়ন্ত্রণও রেখেছিল। প্রথম টাচটাও ঠিকঠাক ছিল। তবে আমি মনে করি এটা আটকানো যেত। কারণ, বল গোলকিপারের হাত ছুঁয়ে গিয়েছিল। তাই আমি বলব, এটা বাঁচানো সম্ভব ছিল”।
দ্বিতীয় গোল সম্পর্কে তিনি বলেন, “বক্সের বাইরে ওদের ফ্রি-কিক দেওয়া এড়ানো যেত। আমরা সব সময় খেলোয়াড়দের বলি যতটা সম্ভব বক্সের সামনে ফাউল করা এড়াতে। কিন্তু ম্যাচে এটা হয়ে যায়, কিছু করার নেই। তবে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে আমরা চেষ্টা অব্যহত রাখব এবং আগামী পাঁচটি ম্যাচে আমাদের সেরা পারফরম্যান্স দেওয়ার চেষ্টা করব। যেহেতু এখন সব সিদ্ধান্ত আমিই নিচ্ছি, এটা আমার দ্বিতীয় ম্যাচ, তাই আমি দেখার চেষ্টা করছি দলে কারা সত্যিই সুযোগ পেতে চায়”।
এ দিন দলে হাফ ডজন পরিবর্তন করে প্রথম এগারো নামান মেহরাজউদ্দিন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আসলে আমরা তরুণ খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছি, কারণ তারা কঠোর পরিশ্রম করছে অনুশীলনে। তারা যখন মাঠে নামে, তখন আমরা আশা করি তারা তাদের সেরাটা দেবে। মকান চোঠে চেন্নাই এফসি ম্যাচেও নেমেছিল এবং পার্থক্য গড়ে দিয়েছিল। আজও সে গোল করেছে। ভবিষ্যতে আমরা চোঠেকে আরও বেশি সময় খেলানোর পরিকল্পনা করছি”।