
ওঙ্কার ডেস্ক: দেশে ইতিমধ্যে ৭ জন হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। যা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। যদিও এই বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছে, ‘চিন্তার কোনও কারণ নেই’। কেন্দ্র জানিয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এইচএমপি ভাইরাস ইতিমধ্যে ছড়িয়েছে। তাই ‘আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই।
১. কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে দুই শিশুর শরীরে এইচএমপি ভাইরাসের হদিশ মেলে। একজনের বয়স তিন মাস, আরেকজনের বয়স আট মাস। তিন মাস বয়সী শিশু ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে যাওয়ায় তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আট মাস বয়সী শিশু ব্রঙ্কোনিউমোনিয়া নিয়ে ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। জানুয়ারির ৩ তারিখে তার এইচএমপি পজিটিভ ধরা পড়ে।
২. ভারতে এইচএমপিভির তৃতীয় কেসটি ধরা পড়ে আহমেদাবাদের দুই মাস বয়সী একটি শিশুর শরীরে। আহমেদাবাদের অরেঞ্জ চিলড্রেন হাসপাতালের চিকিত্সক ডাঃ নীরব প্যাটেল বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত শিশুটি একেবারেই ঠিক রয়েছে। তাকে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হবে।’ তিনি জানান, ২৪ ডিসেম্বর সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্টের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল শিশুটিকে।
৩.অন্যদিকে, তামিলনাড়ুতে দুই শিশুর দেহে এইচএমপিভি ধরা পড়েছে। একজন চেন্নাইয়ের এবং অন্যজন সালেমের। তবে ভারতে এখনও পর্যন্ত এইচএমপি ভাইরাসের কারণে কোনও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ জানিয়েছে, এইচএমপি ভাইরাস ইতিমধ্যেই ভারত-সহ বিশ্বব্যাপী রয়েছে। দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুস্থতা (আইএলআই) বা গুরুতর তীব্র শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতার ক্ষেত্রে কোনও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নেই বলে জানিয়েছে শীর্ষ চিকিৎসা সংস্থা। শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতার যে কোনও সম্ভাব্য বৃদ্ধি পরিচালনা করতে ভারত প্রস্তুত বলে জানায় সংস্থাটি।
৪. জানা গিয়েছে বেঙ্গালুরু এবং আহমেদাবাদে আক্রান্ত শিশু কিংবা তাদের পরিবারের কারোর সম্প্রতি বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই। তামিলনাড়ুতে ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। সম্প্রতি চিনে এইচএমপি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। যার পর থেকেই চর্চায় উঠে এসেছে।
৫. ভারতে এইচএমপিভি ভাইরাসের সংক্রমণের খবর পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে এইচএমপিভি কোনও নতুন ভাইরাস নয়। ২০০১ সালে এটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল’। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘বাতাসের মাধ্যমে এইচএমপি ভাইরাস ছড়ায়। সব বয়সের মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। শীতকালে এবং বসন্তের আগে এই ভাইরাস বেশি ছড়ায়।’ তাঁর সংযোজন, উদ্বেগের কোনো কারণ নেই, সরকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
৬. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাক্তন প্রধান বিজ্ঞানী ডঃ সৌম্য স্বামীনাথন বলেন, এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে তিনি বলেন, ‘এটি একটি পরিচিত ভাইরাস যা শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়, বেশিরভাগই হালকা’। তবে শীতকালে সাধারণ সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মাস্ক পরার পাশাপাশি, হাত ধোয়ার কথা বলেন তিনি। সেইসঙ্গে ভিড় এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তবে গুরুতর অসুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ভিডিও দেখুন-