
ওঙ্কার ডেস্ক: পেহেলগাঁও জঙ্গী হামলার পর ৬৫ বছর পুরানো চুক্তি ভেঙে সিন্ধু নদের জল আটকে দিয়েছিল ভারত। তাতেই জলসংকটের মুখে পড়তে হয়েছে পাকিস্তানকে। ভারত যাতে এই চুক্তি রদের সিদ্ধান্তকে পুনরায় বিবেচনা করে দেখে সেই অনুরোধে ভারতেকে চার বার চিঠি লিখেছেন পাকিস্তানের জলসম্পদ মন্ত্রী সৈয়দ আলি মুর্তজা। ভারতও ষ্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ‘রক্ত আর জল একসঙ্গে বইতে পারে না’।
২০২৫ সালের ২৬ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগাঁও এ পাকিস্তান পুষ্ট জঙ্গীদের গুলিতে মারা যান ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক। সেই ঘটনার প্রতিক্রয়া স্বরুপ সিন্ধু-চুক্তি রদ করেছে ভারত। এতেই মহাবিপদে পড়েছে প্রতিবেশী দেশ। ইসলামাবাদ ইতিমধ্যেই চার বার চিঠি দিয়েছে ভারতের জলশক্তি মন্ত্রককে। প্রবল জলকষ্টে ভুগছে গোটা দেশ। তাই বারবার সিন্ধু নদের জল চেয়ে চিঠি পাকিস্তানের। কিন্তু ভারত প্রথম থেকেই সোজাসুজি ভাবেই জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়া বন্ধ করে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নির্ভরযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ভারত তার এই সিদ্ধান্তে অনড় থাকবে।
১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক উন্নতির উদ্দেশ্যে সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছিল। সিন্ধু, বিতস্তি এবং চন্দ্রভাগা নদীর জল বইত পাকিস্তানের উপর দিয়ে। সেই জলের উপর নির্ভর করত পাকিস্তানের অধিকাংশ চাষাবাদ। উল্লেখ্য কাশ্মীরে পেহেলগাঁও-এ নিরপরাধ পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার পরই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এই হামলার প্রত্যাঘাত স্বরূপ ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালিত হয়। সেই অপারেশনে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট ৯ টি জঙ্গি ঘাঁটি ধুলিসাৎ করেছে ভারতীয় সেনা। পরবর্তীতে পাকিস্তানের অনুরোধে যুদ্ধবিরতিতে মত দিলেও সিন্ধু চুক্তির জল সিদ্ধান্তের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। ভারতের কথায় সন্ত্রাস আর বাণিজ্য কখনও একসাথে হতে পারে না।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শারিফ ভারতের এই কড়া সিন্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। বলেছেন সিন্ধুনদের জলের উপর ২৪ কোটি পাকিস্তানির জীবন নির্ভর করে। সেই জল বন্ধ করলে ব্যাপক ক্ষতি হবে তাদের। ভারত জলকে অস্ত্র বানিয়ে হামলা চালাচ্ছে পাকিস্তাননের আমজনতার উপর, এটা অপরাধ বলে জানিয়েছেন শারিফ। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক মহলে এ বিষয়ে কথা তুলেছেন তিনি। ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসবাদী পোষণ বন্ধ হলেই সিন্ধু-চুক্তির ব্যাপারে বিবেচনা করবে দিল্লি।