
ওঙ্কার ডেস্ক:
“কিছুক্ষণের জন্য, আমি ভেবেছিলাম আমি মারা যাব। কিন্তু যখন আমি চোখ খুললাম, দেখতে পেলাম আমি বেঁচে গেছি। এবং আমি আমার সিট বেল্ট খুলে সেখান থেকে বেরিয়ে এলাম। এয়ারহোস্টেস এবং আন্টি কাকা সবাই আমার চোখের সামনে মারা গেছেন”, আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া ৪০ বছর বয়সী ব্রিটিশ-ভারতীয় বিশ্বাস কুমার রমেশ এখনও হতবাক। বলেছেন, “আমি কীভাবে বেঁচে গেছি তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়”।
মিঃ কুমারের আসন ছিল ১১এ, জরুরি দরজার ঠিক পাশে, যা স্পষ্টতই বিমানটি হোস্টেলে আঘাত করার সময় খুলে পড়েছিল তিনি হোস্টেলে অবতরণ করেছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “না, আমি মাটির কাছাকাছি ছিলাম, নিচতলায়, যেখানে জায়গা ছিল। তাই আমি সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছি। ভবনের দেয়ালটি বিপরীত দিকে ছিল এবং আমার মনে হয় না যে কেউ এভাবে বেরিয়ে আসতে পেরেছে”। কিছুক্ষণ পরেই আগুন লেগে যায় এবং তার বাহু পুড়ে যায়। “আমার চোখের সামনে দুজন এয়ারহোস্টেস…”, বলতে বলতে দম বন্ধ হয়ে আসছিল বিশ্বাসকুমার রমেশের। দুর্ঘটনাটি কীভাবে ঘটল জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিমান ওড়ার এক মিনিট পর মনে হল বিমানটি আটকে গেছে। তারপর সবুজ এবং সাদা আলো জ্বলে উঠল। পাইলটরা বিমানটি উপরে ওঠানোর চেষ্টা করেছিল কিন্তু এটি পূর্ণ গতিতে গিয়ে বিল্ডিংটিতে ধাক্কা খায়”।
২৪২ জন বিমান আরোহীর মধ্যে একমাত্র তিনিই বেঁচে রয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে ফিরে নিজের অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন সেই বিশ্বকুমার রমেশ।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কবলে পড়া এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটিতে ১১এ আসনের যাত্রী ছিলেন বিশ্বকুমার রমেশ। সংবাদ মাধ্যমকে বিশ্বকুমার বলেন, ‘সব কিছু এত তাড়াতাড়ি ঘটেছিল, বুঝতেই পারিনি। যখন জ্ঞান ফেরে, উঠে দেখি, চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে লাশ। ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। উঠে দাঁড়ানোর পরেই পালাতে শুরু করেছিলাম আমি। সেই সময় কেউ একজন আমাকে ধরে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে দেন। তার পর ওই অ্যাম্বুল্যান্সে করেই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
উল্লেখ্য, বিমানে থাকা যে ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ১ জন কানাডিয়ান এবং ৭ জন পর্তুগিজ নাগরিক। যাত্রীদের মধ্যে ১০৪ জন পুরুষ এবং ১১২ জন মহিলা ছিলেন। এ ছাড়া দুই নবজাতক-সহ ১৪ জন শিশু ছিল। গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিও অভিশপ্ত ওই বিমানে ছিলেন। দুর্ঘটনায় তিনিও প্রাণ হারান।
ডাইরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন বা ডিজিসিএ জানিয়েছে, বিমানটি ভারতীয় সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুর ১:৩৯ মিনিটে যাত্রা শুরু করে এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে ‘মেডে’ কল করে। বিমানটি প্রায় ৮২৫ ফুট উচ্চতায় ওঠার পর সেটি ভেঙে পড়ে।