
নিজস্ব সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদ : মাটিতে বসে হাউমাউ করে কাঁদছেন একের পর এক মহিলা। কেউ বা ভাঙা ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বলছেন, “সব শেষ হয়ে গেল!” আতঙ্ক, অনিশ্চয়তা আর নিদ্রাহীন রাত— এই নিয়েই এখন বেঁচে থাকা মুর্শিদাবাদের বেতবোনা, সুতি, ধুলিয়ান আর সামশেরগঞ্জের বাসিন্দাদের। শনিবার সেই রক্তাক্ত বাস্তবের মুখোমুখি হলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল।
ওয়াকফ বোর্ড সংশোধনী আইন নিয়ে অশান্তি যে কী ভয়ানক রূপ নিয়েছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই এলাকাগুলোর বিভীষিকা। দিনেদুপুরে লুটপাট, বাড়ি জ্বালানো, মারধরের অভিযোগে এখন গৃহহীন অসংখ্য মানুষ। আশ্রয় নিয়েছেন অন্য জেলার ত্রাণশিবিরে। কেউ কেউ এখনও ভয়ে গ্রামে ফিরতে পারছেন না।
শনিবার জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া রাহাতকারের নেতৃত্বে প্রতিনিধিরা যখন বেতবোনায় পৌঁছন, তখনই শুরু হয় কান্না। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা মহিলারা জড়ো হয়ে ধরেন কমিশনের গাড়ি। একের পর এক ভয়ানক অভিজ্ঞতা শোনাতে গিয়ে কেউ কথা শেষ করতে পারলেন না, কেউ বা কেঁদে ফেললেন মাঝপথেই।
“চিন্তায় ঘুম আসে না, আতঙ্কে বাচ্চারা চিৎকার করে ওঠে মাঝরাতে,” বলছিলেন এক স্থানীয় মহিলা। তাঁদের বক্তব্য, প্রশাসনের কাছ থেকে এখনও মেলেনি কোনও স্থায়ী আশ্বাস। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা চাইছেন এলাকায় বিএসএফ ক্যাম্প গড়ে তোলা হোক।
কমিশনের সদস্যরা আশ্বাস দেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক গোটা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে। কমিশনের তরফে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। তাঁরা এ-ও জানান, এলাকায় নিযুক্ত বাহিনীর নিরাপত্তার দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।