
ওঙ্কার ডেস্ক : ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য আমেরিকার অনুদানকে ফের ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিমধ্যে আমেরিকা এই খাতে যে প্রায় ১৮২ কোটি টাকা অনুদান দিয়ে আসছিল তা বন্ধ করে দিয়েছে। তবু এই অনুদান বিতর্ককে যেন জিইয়ে রাখতে একের পর এক ইন্ধন দিয়ে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। শনিবার তিনি আবারও জানালেন, আমেরিকার থেকে অনেক সুযোগসুবিধা নেয় ভারত। এখন ভারতের উচিত, আমেরিকাকে সাহায্য করা। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর আমেরিকার অনুদান নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশকে অর্থসাহায্য করে থাকে আমেরিকা। সেই খাতে ভারতে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ বাড়াতে এই পরিমান আর্থিক অনুদান দিয়ে আসছিল আমেরিকা। গত রবিবার এই অনুদান বন্ধের কথা ঘোষণা করে আমেরিকার সংশ্লিষ্ট দফতর। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ভারতকে এই অর্থসাহায্যের কোনও প্রয়োজন নেই। শনিবার একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি এই ইস্যুটি উস্কে দিলেন। বলেন, ‘‘ভারতকে তাদের নির্বাচনের জন্য আমরা এত টাকা কেন দেব ? বরং ওরা আমাদের সাহায্য করুক।’’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘‘আমাদের থেকে প্রচুর সুযোগসুবিধা নেয় ভারত। ভারতের কর কাঠামোকে খোঁচা দিয়ে তিনি জানান, ওদের করের পরিমাণ অনেক বেশি। আমরা ওখানে কিছু বিক্রি করতে চাইলে ২০০ শতাংশ কর নেওয়া হয়! আর ওদের ভোটের জন্য আমরা টাকা পাঠাচ্ছি ? কেন ?’’
আমেরিকার অনুদান প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামও উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য ২.১০ কোটি ডলার ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে যাচ্ছে ! কিন্তু কেন আমরা এই টাকা ভারতকে দেব ? আমাদেরও তো ভোটের হার বৃদ্ধি করা দরকার।’’ ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর ভারতের বিদেশ মন্ত্রক তার প্রতিক্রিয়ায় বিষয়টিকে উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল বলেছেন, “সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসনের তরফে তহবিল সম্পর্কিত কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ হচ্ছে, যা উদ্বেগের।” এই প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘ট্রাম্পের প্রশাসনের আধিকারিকেরা কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন এবং অবশ্যই তা উদ্বেগের। ইউএসএইড নিয়ে আমরা কাজ করি কি না, তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। ইউএসএইড-কে ভারতে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে ওই সংস্থা এখানে কাজ করছে। কিন্তু ওদের কাজ করতে দেওয়া হয়েছিল সরল বিশ্বাসে, ভাল কাজের জন্য। এখন কথা উঠছে, আমেরিকার অনুদান খারাপ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। যদি এই অভিযোগ সত্যি হয়, দেশের মানুষের এটা জানার অধিকার আছে যে, কারা সেই খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত। এরপরও ট্রাম্প ফের এই অনুদানের বিতর্ক উস্কে দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে জটিলতা বাড়ছে।