
ওঙ্কার ডেস্কঃ গ্রিনল্যান্ডের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে মরিয়া আমেরিকা। প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীবারের জন্য চেয়ারে বসেই এই ইস্যুতে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এবার সরাসরি মাঠে নামলেন তিনি। টেলিফোনে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গে তাঁর প্রায় ৪৫ মিনিটের কথাবার্তা কার্যত হম্বিতম্বির পর্যায়ে পৌঁছুল। বরফের নিচে খনিজ-সমৃদ্ধ আধা স্বশাসিত দ্বীপটি এখন ডেনমার্কের অংশ বলে ধরা হয়। তাকে আমেরিকার অন্তর্ভুক্ত করতে ট্রাম্প এবার ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীকে ‘কড়া বার্তা’ দিলেন বলে জানা গেছে। যে ভাবেই হোক গ্রিনল্যান্ডের উপর আমেরিকা যে দখল চায় এটা ক্রমশই গাঢ় হচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে। আমেরিকার এধরণের আচরণ নতুন কিছু নয়। আফগানিস্থান, ইরাকের ঘটনা উদাহরণ হিসেবে ফের উঠে আসছে। আর এর মধ্যেই দানা বাঁধছে অতীতের পুনরাবর্তণের আশঙ্কা।
‘দ্য ফিনানশিয়াল টাইম্স’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আধিকারিকেরা ট্রাম্পের এই কথা বলার ধরণকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলে মনে করছে। ভৌগলিক ভাবে গ্রিনল্যান্ড উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মধ্যে থাকলেও, এটি আমেরিকার অন্তর্ভুক্ত নয়। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের এটি একটি আধা স্বশাসিত দ্বীপ। তাকে ইউরোপ মহাদেশের ডেনমার্কের একটি অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকেই ট্রাম্প বলে আসছিলেন, গ্রিনল্যান্ডকে তিনি আমেরিকার অন্তর্ভুক্ত করতে চান। তাঁর যুক্তি, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ আমেরিকার হাতে থাকা অত্যন্ত জরুরি। এই লক্ষ্যে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেন ট্রাম্প। বোঝাতে চেয়েছিলেন গ্রিনল্যান্ডকে আমেরিকার অন্তর্ভুক্ত করা তাঁর কাছে ‘গুরুত্বপূর্ণ’। কিন্তু তাঁর সব যুক্তি নাকচ করে দেন ফ্রেডেরিকসেন। তিনি বুঝিয়ে দেন, খনিজ সম্পদে ভরা দ্বীপটি ‘বিক্রি’ করতে তাঁরা একেবারেই আগ্রহী নন। এতেই বেজায় চটে যান ট্রাম্প। জানা যায়, ফোনেই ভীষণ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তিনি, এমন কি বাক্যালাপ পৌঁছে যায় সংঘাতের পর্যায়ে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আধিকারিকেরা জানান, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে ফ্রেডেরিকসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করে দেন ট্রাম্প। তাঁর সাফ কথা, আধা স্বশাসিত দ্বীপটিতে সম্পূর্ণ ভাবে আমেরিকার নিয়ন্ত্রণ চান। যদিও ফ্রেডেরিকসেনের দফতর থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ প্রসঙ্গে এইসব কথা অগ্রাহ্য করা হয়েছে।