
ওঙ্কার ডেস্ক: পাকিস্তানের বালুচিস্তানে ট্রেন হাইজ্যাকের পর পণবন্দি থাকা শতাধিক যাত্রীকে উদ্ধার করল পাকিস্তানের সেনা বাহিনী। মঙ্গলবার জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাকের পর রাতেই বালুচিস্তানের বিদ্রোহী গোষ্ঠী বালোচ লিবারেশন আর্মি বা বিএলএ দাবি করে, তারা মহিলা ও শিশুদের মুক্তি দিয়েছে। যদিও সেই সময় পর্যন্ত বন্দি ছিলেন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, পুলিশ, আইএসআই এবং এটিএফের সদস্য-সহ ১৮২ জন। বিএলএ-এর তরফে হুমকি দেওয়া হয়, সেনাবাহিনী আক্রমণ করলে পণবন্দিদের হত্যা করা হবে।
বিএলএ বিদ্রোহীদের হুমকি উপেক্ষা করে পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটে সেনা। শুরু হয় গুলি ও পাল্টা গুলির লড়াই। সেনার সঙ্গে গুলি যুদ্ধের ফলে ১৬ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছে বলে পাক সেনার তরফে জানানো হয়েছে। আহত হয়েছেন ৫৭ জন। ১০৪ জন পণবন্দিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে সেনা বাহিনীর জওয়ানরা।
উল্লেখ্য, প্রায় ৫০০ যাত্রী নিয়ে মঙ্গলবার সকালে পাকিস্তানের কোয়েটা থেকে পেশোয়ার যাচ্ছিল জাফর এক্সপ্রেস। সেই পথে একটি সুড়ঙ্গের কাছে বালুচ লিবারেশন আর্মি ট্রেনে হামলা চালায়। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয় রেললাইন। গুলি চালিয়ে ট্রেনের দখল নেয় বিদ্রোহীরা। প্রসঙ্গত, এই জাফর এক্সপ্রেসে একাধিক পাক সেনা জওয়ান, গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিক এবং ফ্রন্টিয়ার কোর বাহিনীর সদস্যরা যাতায়াত করেন। আর সে কারণেই মনে করা হচ্ছে এই ট্রেনকে লক্ষ্যবস্তু করেছে বিদ্রোহীরা।
স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান অধিকৃত বালুচিস্তানকে পৃথক করার দাবিতে লড়াই করছে বিএলএ। এর আগেও একাধিক বার তারা বালুচিস্তানকে স্বাধীন করার দাবি তুলেছিল। ২০০০ সালে বালুচিস্তানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার দাবিতে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল। পাকিস্তান সেনার তরফে বালুচ বিদ্রোহীদের দমন করতে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে। যদিও পাকিস্তান, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএলএ-কে জঙ্গি সংগঠনের তকমা দিয়েছে। দীর্ঘ দিন পর ফের বালুচ বিদ্রোহীরা মাথাচড়া দেওয়ায় দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ইসলামাবাদের কপালে।