
নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: সকালটা ছিল একেবারেই অন্য রকম। অন্যান্য দিনের মতো পাতাতোলা শুরু হয়েছিল। ঘন পাতার ফাঁক গলে যখন প্রথম রোদের আভা বাগানে পড়ছে, ঠিক তখনই ঘটে গেল অঘটন। জঙ্গলের দিক থেকে হঠাৎই বেরিয়ে এল এক চিতাবাঘ। এক লাফে ঝাঁপিয়ে পড়ল শ্রমিকের উপর।
জলপাইগুড়ির ভান্ডিগুড়ি চা বাগানের ৬০ নম্বর ব্লকে পাতা তুলছিলেন করলা লাইনের বাসিন্দা ঝুটুং ওরাও (৪০)। আচমকা বাঘের হামলায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। শরীরে গভীর ক্ষতের চিহ্ন। রক্তে ভেসে যায় চারপাশ। তৎক্ষণাৎ অন্যান্য শ্রমিকেরা ছুটে এসে উদ্ধার করেন ঝুটুংকে। সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল, সেখান থেকে পাঠানো হয় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। এখনও সঙ্কটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন তিনি।
এই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে ভুগছেন বাগান এলাকার শ্রমিক ও বাসিন্দারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরেই বন্যপ্রাণীর আনাগোনা বেড়েছে এলাকায়। বিশেষ করে চিতা বাঘ প্রায়শই দেখা যাচ্ছে বাগানের বিভিন্ন অংশে। বন দফতরকে একাধিক বার জানানো হলেও, কোনও কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ।
এ দিন সকালেই গ্রামবাসীরা বন দফতরের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। এলাকা ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। নিরাপত্তার দাবিতে অনেকে কাজ বন্ধ রাখার হুমকিও দিয়েছেন। জলপাইগুড়ি বন বিভাগের এক আধিকারিক জানান, ‘‘ঘটনার খবর পেয়েই একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে। বাঘটি কোথা থেকে এসেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে খাঁচা পেতে ধরা হবে।’’
এই মুহূর্তে ভান্ডিগুড়ি চা বাগানের শ্রমিকদের মনে ভয়ই একমাত্র সত্যি। চা পাতার ঝোপে থাবা লুকিয়ে থাকা চিতাবাঘের দৃষ্টি কখন কার দিকে পড়বে, কেউ জানে না।