
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা : বাধ্য হয়েই ‘হালকা বলপ্রয়োগ’ করা হয়েছে। কসবায় চাকরিহারাদের উপর পুলিশি নিপীড়নের ঘটনা মেনে নিলেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। ওই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের লাথিমারার যে অভিযোগ উঠেছে, সে প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেন, “এই ঘটনা অনভিপ্রেত”, তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, “পুলিশ কারও বিরুদ্ধে নয়”। পুলিশ কমিশনারকে পাশে বসিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবও বলেন, “সরকারি সম্পত্তি যদি ভাঙচুর হয়, পুলিশকে মারধর করা হয়, তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় পুলিশকে তো পদক্ষেপ করতেই হবে।”
কেন এদিন এই ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল কসবার ডি আই অফিসে। রাজ্যের অন্যত্রও প্রায় একই রকম ছবি। চাকরি হারা শিক্ষকদের বিক্ষোভ রুখতে বর্ধমান, দুর্গাপুর, বারাসতেও পুলিশকে মারমুখী হতে দেখা গেছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার দুপুরে রাজ্যের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম রাজ্যের সমস্ত এসপিকে বিশেষ নির্দেশ দিতে হল, যে সব ডিআই অফিসের সামনে চাকরিহারা শিক্ষকরা গিয়ে আন্দোলন করছেন, বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে শান্তির পথে এবং আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টি মিটিয়ে নিতে হবে।
কসবার ডিআই অফিসে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষুব্ধরা। ব্যারিকেড পেরিয়ে ঢুকতে গেলে, পুলিশ লাঠিচার্জ করে। গুরুতর আহত হন অনেক শিক্ষক, অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, কয়েকজনের হাত-পাও ভেঙে গেছে। চাকরি হারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর সহানুভূতিশীল হওয়ার পরিবর্তে এই পুলিশি আচরণে প্রশ্ন উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রী যেখানে চাকরিহারাদের সভায় সহানুভুতি দেখাচ্ছেন, সেখানে তাঁর পুলিশ কেন এমন মারমুখী হচ্ছে। এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ শিক্ষক মহল। বিক্ষোভকারীদের মতে, তাঁরা কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী নন, তাঁদের আন্দোলন ছিল একান্তই মানবিক ও যৌক্তিক দাবির জন্য। তবু কেন এই দমননীতি ? প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত শাসকদলের নেতাদের রক্ষা করতেই সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের বলি করা হচ্ছে। নিয়োগের প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, স্বজনপোষণ, ও কালোবাজারির অভিযোগে ক্ষুব্ধ গোটা রাজ্য।