
সুমিত চৌধুরী: ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার এসএসকেএম অডিটোরিয়ামে গণ কনভেনশন করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
এই কনভেনশন থেকে একটা স্পষ্ট বার্তা এসেছে।
জুনিয়র ডাক্তাররা এখনই আন্দোলনের ঝাঁপ গুটিয়ে দিচ্ছেন না। মহল্লায় মহল্লায় মিটিং মিছিল ছাড়াও মহালয়ার দিন কলকাতায় ধর্মতলায় সমাবেশের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা
তবে এই ডাক আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের একার নয়। সহ নাগরিকেরাও এই ডাকের সঙ্গে থাকছেন।
সত্যিই যদি জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনের উত্তাপ পুজোকে টপকে ধরে রাখতে পারেন তাহলে সেটা রাজ্যের শাসক দলের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ তুলে আনবে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
লালবাজারে সামনে অবস্থান তোলা এবং স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান তোলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে দম ফেলবার সুযোগ দিয়েছে কোন সন্দেহ নেই। ডাক্তারদের হসপিটালে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত মমতাকে স্বস্তি দিয়েছে।
কিন্তু দুটো বিষয় এখনো লাল সংকেত দেখাচ্ছে। এক, আদালতে সিবিআই শেষ পর্যন্ত ঝোলা থেকে কোন কালো বিড়ালটাকে বার করে সেটা স্পষ্ট নয়। কারণ শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ডাক্তার এবং তাদের সহযোগিতা নিজেরা খুন এবং ধর্ষণ করেছিল কিনা তা স্পষ্ট না হলেও, প্রমাণ লোপের জন্য তৎপরতা চালিয়েছিল এটা স্পষ্ট। স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষের কাছে একটা প্রশ্ন আসছে, ঠিক কি কি জিনিস হাস আপ করতে চেয়েছিল স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সক্রিয় শাসক ঘনিষ্ঠচক্র। দ্বিতীয়ত সরকারি স্বাস্থ্য অবস্থায় যে বিপুল দুর্নীতির পাহাড় প্রকাশ্যে এসেছে তা জনমানুসে ভয়ঙ্কর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।
এছাড়াও বাস্তব ঘটনা এটাই জাস্টিস ফর আরজিকর মুভমেন্ট আর শুধু আরজি করে জাস্টিসের দাবিতে সীমাবদ্ধ নেই। বিভিন্ন স্তরে শাসকের নানা অনাচারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ মুখ খোলবার একটা স্পেস হিসেবে এই জাস্টিস ফর আরজিকর আন্দোলন কে এখন চাইছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রথম প্রকাশ্যে আন্দোলনের চাপে পিছু হঠেছেন। মমতাকে ঠেকানো যায় না এই ধারণা ভেঙে গিয়েছে। মানুষ শহর ও শহরতলীতে এলাকায় এলাকায় শাসক দলের এজেন্টের নানা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার সাহস পেয়েছেন জাস্টিস ফর আর জি কর আন্দোলনকে সামনে রেখে। সুতরাং ডাক্তাররা যদি উত্তাপ ধরে রাখবার জন্য কোন চেষ্টা এবং উদ্যোগ জারি রাখেন তাহলে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ নিজের নিজের ক্ষেত্রগত স্বার্থে সেই আন্দোলনের পাশে জড়ো হয়ে যাবেন। যেটাকে ইংরেজিতে বলে স্নো বল এফেক্ট।