
সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, ওঙ্কার বাংলাঃ মণিপুরের রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন বিরোধী জোট INDIA’র সাংসদরা। সফরের দ্বিতীয় দিনে রবিবার রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন জোটের ২১ জন সাংসদ। প্রতিনিধি দলের নেতা, অধীর চৌধুরী জানান, মণিপুরের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে রাজ্যপালের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
প্রায় তিন মাস ধরে উত্তপ্ত মণিপুর। উত্তর পূর্বের রাজ্যটিতে গোষ্ঠী সংঘর্ষে দু’শো জনের কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রায়দিনই মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। বহু মানুষ ঘরছাড়া। কাংপোকপি এলাকায় উপজাতি দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হেনস্থার ছবি সামনে এসেছে। সেই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে গোটা দেশ। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-এর পদত্যাগ চাইছেন অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে শনিবার মণিপুরে গিয়েছেন বিরোধী জোট INDIA’র সাংসদরা। তাঁরা রবিবার সকালেই মণিপুরের রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকের হাতে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে বিরোধী সাংসদরা দাবি করেছেন মণিপুরের পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়ংকর থেকে ভয়ংকরতর হয়ে উঠছে। প্রতিনিধি দলের সদস্য তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন ওঙ্কার বাংলাকে জানান, “ মণিপুরে ত্রাণ শিবিরগুলি অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। একেকটা বড় ঘরে ৪০০-৫০০ জনকে রাখা হচ্ছে। রাজ্য সরকার কেবল চাল আর ডাল দিচ্ছে। কিন্তু ছোটদের খাওয়ার মতো কিছু নেই। দ্রুত ছোটদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা দরকার।” তা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছে প্রতিনিধি দল। দোলা সেনের দাবি, রাজ্যপাল অনুসূয়া উইক বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রতিনিধি দলে থাকা কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আমরা রাজ্যপালকে মণিপুরের দুরবস্থার কথা জানিয়েছি। উনিও আমাদের সঙ্গে সহমত। রাজ্যপালও চান সরকার সবার সঙ্গে কথা বলুক। সব দলকে নিয়ে একটি প্রতিনিধিদল গড়ে মণিপুরে আসার প্রস্তাব দিয়েছেন রাজ্যপাল অনুসূয়া উইক।” কংগ্রেস সাংসদ অধীর আরও বলেন মণিপুরের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে রাজ্যপালের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, শনিবার দিল্লি থেকে ইন্ডিয়া জোটের প্রতিনিধিদল মণিপুরে এসে পৌঁছায়। তাঁরা ইম্ফলে পৌঁছেই দুই ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন। এক এলাকার গাড়ি অন্য এলাকাতে ঢুকতে পারছে না। সে কারণে ভরসা কেবল হেলিকপ্টার। কিন্তু হেলিকপ্টার মিলেছে একটা। একদল পাহাড়ি অঞ্চলে সংখ্যাঁগরিষ্ঠ কুকিদের সঙ্গে দেখা করেন। অন্যদলটি সমতলে মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে দেখা করে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। আজ, রবিবার তাদের দিল্লি ফিরে যাবার কথা।