
ওঙ্কার বাংলা অনলাইন ডেস্কঃ মণিপুরে নকপোগে দুই মহিলাকে নগ্ন করে হাটানো এবং গণধর্ষের ঘটনার ক্ষোভ এবার আছড়ে পড়ল মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলেও। শনিবার আদিবাসী সংগঠন ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডার্স ফোরাম বা (ITLF)-এর কয়েক হাজার মহিলা সদস্য বিক্ষোভ দেখালেন ইম্ফলের ঘড়ি মোড়ে। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন হাজার হাজার মহিলা। ফের উত্তেজনা ছড়ায় মণিপুরে। এরপরই ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি আধা সেনা পাঠায় প্রশাসন। জওয়ানরা ঘটনা স্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে বুঝিয়ে সুজিয়ে অবরোধ তুলে দেন। আর প্রশাসনের এই অতিসক্রিয়তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। বিরোধী কংগ্রেসের অভিযোগ যে তৎপরতায় মহিলাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ তুলতে আধা সামরিক বাহিনী নামাতে হয়, সেই তৎপরতা মণিপুরের মহিলাদের বাঁচাতে লক্ষ্য করা যায় না এন বীরেন সিংহের সরকারকে। এরই মধ্যে পঞ্চম অভিযুক্তকেও গ্রেফতারের কথা ঘোষণা করেছে মণিপুর পুলিশ। অভিযুক্তদের ১১ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, লুঠপাঠ, অগ্নিসংযোগ এবং খুনের ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। পুলিশ সুত্রের খবর অভিযুক্তের বয়স ১৯ বছর। সেই দিনের ২৬ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপিংসে তাকে দেখা গেছে বলেও দাবি করেছেন মণিপুর পুলিশের ডিজি। কিন্তু তাতেও আতঙ্ক কাটছে না মণিপুরে। ৬০ জন মেইতি সমাজের মানুষ মণিপুর ছেড়ে মিজোরামে পালিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রেই দাবি। এই পরিপ্রেক্ষিতে সেদিনের ঘটনার ভিডিও পোস্টটি স্যোসাল মিডিয়া, টুইটার, হোয়াটস আপ, ফেসবুকে ছড়াতে নিষেধ করেছে প্রশাসন। ফের অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হলে কড়া ব্যবস্থা নেবার হুশিয়ারিও দিয়েছে প্রশাসন। প্রসঙ্গত ভাইরাল হওয়া নারকীয় ভিডিওটা দেখে বিরক্ত শীর্ষ আদালতও। অবিলম্বে কেন্দ্র এবং রাজ্যকে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য মণিপুরের ঘটনাকে নিন্দনীয় এবং অনভিপ্রেত বলেছেন ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংও। মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থার অভিযোগে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন বিজেপির এই বিতর্কিত সাংসদ। এদিকে আগামী সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্য বিধানসভার বাদল অধিবেশন। সূত্রের খবর সেই অধিবেশনে মণিপুর নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব আনতে পারে তৃণমূল। সোমবার সংসদেও অধিবেশন শুরু হলে বিরোধীরা যে ফ্লোরে আলোচনা চাইবেন তা বলাই বাহুল্য। সবমিলিয়ে আগামী কয়েকটা দিন মণিপুর কাণ্ডেই আবর্তীত হবে দেশের রাজনীতি, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাই।