
বিপ্লব দাশ : বিভাজনের রাজনীতি থেকে যে দলের উৎপত্তি “মুর্শিদাবাদ কাণ্ডে” তাঁরা যে হঠাৎ সম্প্রতির দিশারী হয়ে উঠবে না এটাই বাস্তব। বরং অযোধ্যা থেকে গুজরাট, এই পথ নির্দেশিকাকেই যে প্রতিটি সংকটকালে মাজাঘষা করে চলতে চাইছে তা বারবার স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ওয়াকফ ইস্যুতে মুর্শিদাবাদের যা পরিস্থিতি, তাতে তারা হঠাৎই মানবিক হয়ে উঠবে, ভারতীয় সংস্কৃতির ধ্বজা তুলে ধরবে এটা কাকপক্ষীও মনে করে না। তাই গুজরাট আর বাংলাকে তারা আলাদা ভাবছে না। হিসেবের খাতাটা এক রেখে তারা প্রাধান্য দিচ্ছে বিভাজনের খাতে কতটা লাভ দাঁড়াচ্ছে। অথচ ভারতের আত্মাই হল ভিন্নতার মধ্যে একতা, বহু ধর্মের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য।
কিন্তু মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক হিংসায় একটি জাতীয় দলের যে ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল সে পথে না গিয়ে বরং তাকে তাতিয়ে তোলার কাজে উদ্যোগী হতে দেখা গেল সেই দলের রাজ্য সভাপতিকে। একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েও তাঁকে নিতে হল বিভাজনের পক্ষ। সমকালীন রাজনীতিতে সোশ্যাল মিডিয়া একটা অতি শক্তিধর গোয়েবেলস হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রেও দেখা গেল, তাকেই বিভাজনের হাতিয়ার করতে। ছড়ানো হল নানান ভ্রান্তি, ভয়, উস্কানি। যেন এই মানব সমাজে তারাই হিন্দুদের বৈতরণী পার করতে আবির্ভূত হয়েছে। তাহলে এটা কী ধর্মের প্রতি অনুরাগ, না কী সংখ্যাগরিষ্ঠ ও সংখ্যালঘুর হিসেব ! চৈতন্যের আদর্শ থেকে সরে গিয়ে এই বাংলায় কি ধর্ম প্রতিষ্ঠা করা যায় ? নাগরিক বিভাজনের ভিতর দিয়ে কি প্রতিষ্ঠা করা যায় জাতির কল্যাণ ? সোজা কথা- মুর্শিদাবাদের ঘটনায় আর রাখঢাক করার কোনো পথ নেই। এটা স্রেফ সাম্প্রদায়িক। দুর্ভাগ্য, এটাই চাইছে দেশের ক্ষমতাসীন দল।